মঙ্গলবার, ১১ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

বিজয়া দশমী

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রতি শুভেচ্ছা

শারদীয় দুর্গোৎসবের বিজয়া দশমী আজ। আনন্দঘন পরিবেশে শুরু হয়েছিল যে দুর্গোৎসব— দেবী বিসর্জনের মধ্য দিয়ে আজ তার ইতি ঘটছে। বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা প্রতি বছরের মতো এবারও হাজির হয়েছিল ভক্তদের মাঝে। ষষ্ঠী তিথিতে বোধন ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে যে আনুষ্ঠানিকতার শুরু হয় সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমীর পূজা-অর্চনার পর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে তার সমাপ্তি হচ্ছে। দুর্গাপূজা উপলক্ষে দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে এবার যে উৎসবের আমেজ লক্ষ্য করা গেছে তা নজিরবিহীন। দেশে এ বছর সর্বাধিকসংখ্যক পূজামণ্ডপে দেবী অর্চনা হয়েছে। পূজামণ্ডপগুলোয় সব ধর্মের মানুষের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। এ সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অঙ্গীকারকেই বিশ্ববাসীর কাছে পরস্ফুিটিত করেছে। দুর্গাপূজার লক্ষ্য হলো শুভশক্তির আরাধনা। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, আদ্যাশক্তি মহামায়া হলেন সৃষ্টির আদি কারণ। অশুভশক্তির বিনাশ ও শুভশক্তির অভ্যুদয় দুর্গা আরাধনার মূল উদ্দেশ্য হিসেবে বিবেচিত। যুগের বিবর্তনে দুর্গোৎসব বাঙালির লোকজ সংস্কৃতির অনুষঙ্গ হিসেবে ঠাঁই পেয়েছে। বাঙালি ঐতিহ্যগতভাবেই উৎসবপ্রিয়। ঈদ ও পূজা ঘিরে জাতীয় জীবনে যে আবেগ সৃষ্টি হয় তা এ সত্যকেই তুলে ধরে। এক সম্প্রদায়ের উৎসবে অন্য সম্প্রদায়ের উপস্থিতি জাতীয় ঐক্যকেই সুসংহত করে। বিজয়া দশমী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা দেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। তাদের সবার কণ্ঠে ঘোষিত হয়েছে ধর্ম যার যার উৎসব সবার— এই অমিয় চেতনায় অভিন্ন অনুভূতি। সারা দুনিয়ার মতো সাম্প্রতিক বছরগুলোয় আমাদের দেশেও জঙ্গিবাদের নোংরা দানব থাবা বিস্তারের চেষ্টা করেছে। অন্ধকারের এই জীবেরা বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক ভাবমূর্তি বিনষ্টের অপচেষ্টাও চালিয়েছে নানাভাবে। আশার কথা, বাংলাদেশের মানুষের উদার ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার কাছে বিভেদকামী অপশক্তি কোনো ঠাঁই পায়নি। এ বছর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দুর্গাপূজা উপলক্ষে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় যে আন্তরিক ভূমিকা রেখেছেন তা প্রশংসার দাবিদার। বিজয়া দশমী উপলক্ষে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রতি আমাদের ফুলেল শুভেচ্ছা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর