শুক্রবার, ১৪ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

সুস্বাগত চীনা প্রেসিডেন্ট

সম্পর্কের মাইলফলক রচিত হোক

বন্ধুরাষ্ট্র চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে আজ বাংলাদেশে আসছেন। মহান অতিথিকে আমাদের স্বাগত। বাংলাদেশ ও চীনের বন্ধুত্বের ইতিহাস আড়াই হাজার বছরের পুরনো। দূর অতীতে হিমালয় ডিঙিয়ে বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন তিন চীনা পর্যটক ফা হিয়েন, ও শুয়ান জং ও ই চিং। বাংলাদেশের মানুষের জন্য চীনা জনগণের শুভেচ্ছা বহন করে এনেছিলেন তারা। ঠিক একইভাবে এ দেশের সন্তান, বিক্রমপুরে জন্মগ্রহণকারী মহাপুরুষ অতীশ দীপঙ্কর চীন সফর করেছিলেন শান্তি ও মৈত্রীর অমীয় বাণী নিয়ে। চীনে ভগবান বুদ্ধের বাণী পৌঁছে দিয়েছিলেন তিনি। সে দেশেই মহাপ্রয়াণ লাভ করেন এ মহাঋষি। মধ্যযুগে চীনা এডমিরাল চাং হ শত জাহাজের বহর নিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেন। তার বিশাল নৌবহর চট্টগ্রাম বন্দরে দুবার নোঙর করে। সে সময়কার বাংলাদেশের শাসক সুলতান গিয়াস উদ্দিন আজম শাহ চীনা অতিথিকে বরণ করতে রাজধানী সোনারগাঁয়ের পানাম নগরীতে বর্ণাঢ্য সংবর্ধনার আয়োজন করেন। চতুর্দশ ও পঞ্চদশ শতাব্দীতে চীনের মিং সম্রাটদের সঙ্গে বাংলাদেশের সুলতানদের গভীর মৈত্রীর বন্ধন ছিল। আধুনিক ইতিহাসে চীনা জনগণের সঙ্গে বাঙালিদের মৈত্রীর বন্ধন সূচিত হয় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চীন সফরকে কেন্দ্র করে। নোবেল পুরস্কার লাভের পর তিনি চীন সফর করেন এবং এক মাস সে দেশে অবস্থান করেন। স্বাধীনতা লাভের ১৫ বছর আগে ১৯৫৬ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চীন সফরের মাধ্যমে দুই দেশের বন্ধুত্বের নব পর্যায় শুরু হয়। এক দশক পর ১৯৬৭ সালে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর চীন সফরে দুই জাতির বন্ধুত্ব বহুমাত্রিকতা লাভ করে। চীন এ মুহৃর্তে জনসংখ্যায় বিশ্বের বৃহত্তম দেশ। অর্থনৈতিক দিক থেকে বন্ধু এ দেশটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। বিশ্বের এক নাম্বার অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে যাচ্ছে আমাদের প্রতিবেশী এ দেশটি। স্বভাবতই চীনা প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফরকে দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক হিসেবে দেখা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে চীনা প্রেসিডেন্টের সফর দুই দেশের সহযোগিতার ক্ষেত্রে নতুন পথ উন্মোচন করবে। বাংলাদেশের উন্নয়নে চীনের প্রতিশ্রুতির কথাও ঘোষিত হবে এ সফরে। আমরা আশা করব প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের এ সফর শুধু মৈত্রীর সম্পর্ককে নতুন মাত্রায় উন্নীত করাই নয়, এই অঞ্চলের শান্তি, সহযোগিতা এবং সমৃদ্ধির পথকেও প্রশস্ত করবে।  চীনা অতিথি ও তার সফরসঙ্গীদের আমাদের সুস্বাগত।

সর্বশেষ খবর