মঙ্গলবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

ব্রিকস বিমসটেক এক সম্ভাবনার নাম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের মনোরম দ্বীপরাজ্য গোয়ায় অনুষ্ঠিত ব্রিকস ও বিমসটেক আউটরিচ সম্মেলনে এ দুই জোটের মধ্যে সহযোগিতা বাড়াতে তিনটি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী তার প্রস্তাবে বিমসটেকভুক্ত দেশগুলোয় মানসম্মত ও টেকসই অবকাঠামো তৈরি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনে জোর দেওয়া এবং দুই অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহযোগিতা জোটের মধ্যে সহযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টিতে সংলাপের তাগিদ দিয়েছেন। গত রবিবার গোয়া সম্মেলনে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব তাত্পর্যের দাবিদার। পশ্চিমা বিশ্বের বাইরে দ্রুত উন্নয়নের পথে ধাববান চারটি দেশ ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত ও চীনকে নিয়ে ২০০১ সালে গঠিত হয় ‘ব্রিক’। এক দশক পর দক্ষিণ আফ্রিকা যোগ দিলে এ জোট ব্রিকস নাম ধারণ করে। ‘নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক’ নামের একটি ব্যাংকও গঠন করেছে জোটটি। ব্রিকসের চার বছর আগে ১৯৯৭ সালের জুনে গঠিত হয় চার দেশের অর্থনৈতিক জোট বিসটেক— বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড অর্থনৈতিক সহযোগিতা। বিসটেকের সঙ্গে মিয়ানমার যোগ দিলে জোটের নতুন নামকরণ হয় বিমসটেক। ২০০৪ সালে নেপাল ও ভুটান এর পূর্ণ সদস্য হয়। এ দুই জোটের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের উপায় খুঁজতে গোয়ায় আয়োজিত আউটরিচ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিমসটেক দেশগুলোর এক বড় অংশে মানসম্পন্ন ও টেকসই অবকাঠামো গড়ে তোলা জরুরি। এজন্য ব্রিকস ব্যাংকের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন তিনি। বিমসটেক অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও নতুন উদ্ভাবনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘টেকসই উন্নয়নের নতুন নতুন উপায় উদ্ভাবনের জন্য ‘দক্ষিণ-দক্ষিণ ও ট্রায়াঙ্গুলার’ সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব দেন। প্রযুক্তির উন্নয়নে ব্রিকস নেতাদের সহযোগিতা আরও বাড়ানোরও আহ্বান জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী বিমসটেকভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে মুক্তবাণিজ্য অঞ্চল গঠনেরও তাগিদ দেন। স্মর্তব্য, মুক্তবাণিজ্য অঞ্চল গঠনে এক যুগ আগে আলোচনা শুরু হলেও এখন পর্যন্ত চুক্তি চূড়ান্ত না হওয়ার বিষয়টি হতাশাজনক। আগামী বছর বিমসটেকের ২০তম বর্ষপূর্তিতে এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার যে আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রাসঙ্গিকতার দাবিদার। গত ২০ বছরে বিমসটেকের তত্পরতা প্রস্তুতি পর্বেই সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে। ব্রিকসের সঙ্গে এ জোটের সম্পর্ক গড়ে উঠলে বিশ্ব অর্থনীতিতে সদস্যভুক্ত দেশগুলোর এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও সৃষ্টি করবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর