বুধবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

প্রবাসে আইন ভঙ্গের প্রবণতা

দেশের সুনামের জন্য বিড়ম্বনা ডেকে আনছে

বিশ্বের ৪৯ দেশের কারাগারে বাংলাদেশের ৯ হাজার ৯৬৭ নাগরিক আটক রয়েছেন। সংসদে প্রশ্নোত্তরকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দেওয়া এ তথ্য নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। বিদেশের কারাগারে আটক বাংলাদেশিদের এক ক্ষুদ্র অংশ অপরাধে জড়িত হয়ে জেল খাটলেও বেশির ভাগ আটক রয়েছেন অবৈধভাবে সংশ্লিষ্ট দেশে যাওয়া এবং ভিসার মেয়াদ না থাকা সত্ত্বেও সে দেশে অবস্থান করার কারণে। ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় অনেকেই অবৈধ পথে বিভিন্ন দেশে গিয়ে আটক হচ্ছেন সংশ্লিষ্ট দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে। আবার অনেকে বিদেশে ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও অবস্থান করে অবৈধ বলে বিবেচিত হচ্ছেন। কোনো কোনো বাংলাদেশি বিদেশে অবস্থানকালে চুরি, মাদক পাচার থেকে শুরু করে লোমহর্ষ খুন-খারাবিতেও জড়িত হওয়ার কারণে ধরা পড়ার পর তাদের ঠাঁই হচ্ছে বিদেশের কারাগারে। বিভিন্ন দেশের বাংলাদেশ মিশনের পক্ষ থেকে স্বীকার করা হয়েছে, আটকদের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর বাংলাদেশ মিশনে যোগাযোগ করলেই কেবল তাদের খোঁজ রাখা সম্ভব হয়। অনেক দেশে বাংলাদেশের মিশন না থাকায় সেখানকার খবরাখবর থাকে অন্ধকারে। তবে খোঁজ পেলেই বন্দী বাংলাদেশিদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয় এমনই দাবি তাদের। উদ্ধারের গতি শ্লথ হলেও চেষ্টা ও উদ্যোগ উভয়ই আছে সরকারের। সংসদে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আটক বাংলাদেশিরা যাতে সুষ্ঠু বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দ্রুত মুক্তিলাভ করতে পারে সে জন্য সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ দূতাবাসগুলো আইনগত সহায়তা প্রদান করছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ বক্তব্য বিদেশে আটক বাংলাদেশিদের স্বজনদের কিছুটা হলেও আশ্বস্ত করবে, সন্দেহ নেই, বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশির বন্দী থাকার ঘটনা বিদেশে দেশের ভাবমূর্তিতে বিড়ম্বনা ডেকে আনছে। এ অকাম্য পরিণতি এড়াতে যারা বিদেশে যাচ্ছেন তারা যাতে সংশ্লিষ্ট দেশে আইন ভঙ্গের ঘটনায় জড়িত হয়ে না পড়েন সে ব্যাপারে উদ্বুদ্ধকরণের উদ্যোগ নিতে হবে।  বিদেশি মিশনগুলোতেও এ ব্যাপারে তদারকির ব্যবস্থা রাখার বিষয়টি ভাবা যেতে পারে। বিদেশ যাওয়ার আগে নিশ্চিত হতে হবে আদম ব্যাপারী তাদের যে পাসপোর্ট ভিসা করে দিয়েছে তা সঠিক কিনা।

সর্বশেষ খবর