বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

জননিরাপত্তায় নজর দিন

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ইতিবাচক ভূমিকা কাম্য

দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা ক্রমেই থাবা বিস্তার করছে। প্রায়ই নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছে কোনো না কোনো মানুষ। থানায় জিডি করেও তাদের উদ্ধার করা যাচ্ছে না। এদের একাংশের লাশের সন্ধান পাচ্ছেন স্বজনরা, অন্যদের খোঁজ মিলছে না। দেশে অজ্ঞাত লাশের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কীভাবে একজন তরতাজা মানুষ লাশে পরিণত হলো সে ব্যাপারে তাদের আগ্রহেও ঘাটতি পড়ছে। স্বভাবতই থেমে যায় ওই হত্যার তদন্ত কার্যক্রম। দেশের রেলপথগুলো নিখোঁজ মানুষের লাশের ভাগাড়ে পরিণত হতে চলেছে বললেও অত্যুক্তি হবে না। রেলওয়ে পুলিশ ২০১২-১৩ সালে ১ হাজার ৮১১ জনের লাশ উদ্ধার করেছে রেললাইনের মধ্য থেকে, যার বেশিরভাগই অস্বাভাবিক মৃত্যুর। ২০১৬ সালে কমলাপুরে অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার হয়েছে ৭৯টি, নারায়ণগঞ্জে ১৩টি, তেজগাঁওয়ে ২৪টি, ক্যান্টনমেন্টে ২১টি, বিমানবন্দরে ৩৯টি, টঙ্গীতে ১১টি, জয়দেবপুরে ১৬টি, মির্জাপুরে ১২টি, টাঙ্গাইলে ১৮টি এবং শ্রীপুরে ১টি। রেলপুলিশের মতে, দুষ্কৃতকারীরা বেশিরভাগ সময় রেললাইনকে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করার ক্ষেত্র হিসেবে বেছে নেয়। বিভিন্ন স্থানের খুনের ঘটনার লাশও পাওয়া যায় রেললাইনের ওপর। প্রতিপক্ষের হাতে জীবননাশের আশঙ্কায় থানায় জিডি করেও শেষ রক্ষা হচ্ছে না। গাজীপুরের বিভিন্ন স্থান থেকে তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয় তারা মৃত্যুর আগেই সংশ্লিষ্ট থানায় নিরাপত্তা চেয়ে জিডি করেছিলেন। ২০১২ সালের ২৯ আগস্ট চন্দ্রা রেললাইনের কাছে ২৫ বছর বয়সী এক যুবকের লাশ পাওয়া যায়। স্থানীয়দের কাছে তিনি নাজমুল নামে পরিচিত ছিলেন। এলাকাবাসীর ধারণা সেটি কোনো দুর্ঘটনা ছিল না, ছিল পরিকল্পিত খুন। একই বছরের ৮ অক্টোবর গাজীপুরের মৌচাক রেললাইনের পাশে জনি মিয়া নামে ২০ বছর বয়সী আরেক যুবকের লাশ পাওয়া যায়। সেই যুবকও মৃত্যুর আগে জিডি করেছিলেন। জননিরাপত্তার অভাব জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর সাধারণ মানুষের আস্থায় চিড় ধরাচ্ছে। দেশে জনসংখ্যার তুলনায় পুলিশের সংখ্যা এমনিতেই কম। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সীমিত সদস্যদের বড় অংশকেই নিয়োগ করা হয় ভিআইপিদের নিরাপত্তার জন্য। জঙ্গিদের ওপর নজর রাখতেও তাদের একাংশকে ব্যস্ত থাকতে হয়। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার বিষয়টি যে কারণে উপেক্ষিত হচ্ছে। এ অবস্থার অবসানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি তাদের অঙ্গীকারবদ্ধ ভূমিকাও নিশ্চিত করা জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর