বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

টিপিপি থেকে ট্রাম্পের পিছটান

বাংলাদেশের জন্য সুখবর

নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা হাতে নিয়েই ১২ দেশের ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিপিপি) চুক্তি থেকে তার দেশের সরে আসার কথা ঘোষণা করেছেন। টিপিপি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রেরই আগ্রহে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও এ চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছিল জাপান, কানাডা, ব্রুনাই, চিলি, নিউজিল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, মেক্সিকো, পেরু ও ভিয়েতনাম। চুক্তি স্বাক্ষরকারী ১২টি দেশ বিশ্বের অর্থনীতির প্রায় ৪০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। এ চুক্তি বাস্তবায়ন হলে স্বাক্ষরকারী দেশগুলো আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা পেত। এ জন্য একটি সাধারণ নীতি অনুসরণ করত। এ চুক্তিতে বাংলাদেশের আশঙ্কা ছিল ভিয়েতনামকে ঘিরে। তৈরি পোশাক শিল্পে দীর্ঘদিন যাবৎ চীন ও বাংলাদেশ নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করলেও ভিয়েতনামও এ ক্ষেত্রে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্ব্বী। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের রপ্তানি খাতের সবচেয়ে বড় বাজার। চুক্তিটি কার্যকর হলে ভিয়েতনাম যুক্তরাষ্ট্রে শুল্কমুক্ত রপ্তানি সুবিধা পেত। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশকে প্রায় ১৬ শতাংশ বাড়তি শুল্ক-কর পরিশোধ করতে হতো। বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে টিপিপি অশনি সংকেত বলে বিবেচিত হচ্ছিল। চুক্তি বাস্তবায়নের আগেই যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানিকারকরা ভিয়েতনামের সঙ্গে ব্যবসা বাড়িয়ে দিয়েছিল। তা বাস্তবায়িত হলে অসম প্রতিযোগিতায় পড়ত বাংলাদেশ। নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার নির্বাহী আদেশ বলে টিপিপি থেকে বেরিয়ে আসায় তা বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য আশীর্বাদ বয়ে আনবে। যুক্তরাষ্ট্র সে দেশে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানিতে শুল্ক ও কোটামুক্ত বা জিএসপি সুবিধা দিলেও তৈরি পোশাকের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য ছিল না। অথচ রানা প্লাজা দুর্ঘটনার সূত্র ধরে সে সুবিধাও প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের এ কড়া সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের গার্মেন্ট শিল্প আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হলেও ভাবমূর্তির সংকটে পড়ে। ১২টি দেশের অংশীদারিত্ব চুক্তি বাস্তবায়িত হলে শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, জাপান, কানাডা, নিউজিল্যান্ড অস্ট্রেলিয়ায়ও বাংলাদেশের পোশাক শিল্প প্রতিকূল অবস্থায় পড়ত। মেক্সিকো ও পেরুর মতো সম্ভাবনাময় বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রেও অন্তরায় সৃষ্টি হতো।

সর্বশেষ খবর