রবিবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

শিশু অপহরণ চক্র

অপরাধীদের কঠোর শাস্তি কাম্য

শিশু অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়, না পেলে হত্যা এবং লাশ গুম করা ছিল যাদের পেশা এমন একটি অপরাধী চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। তাদের কাছ থেকে শিশু অপহরণ ও তাদের জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায় সম্পর্কিত যেসব তথ্য পাওয়া গেছে তা রোমহর্ষক বললেও কম বলা হবে। ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে আটক অপহরণ চক্রের ছয় সদস্য স্বীকার করেছে অপহূত শিশুদের মুক্তিপণ না পেলে তাদের বিদেশে পাচার করে দেওয়া হতো নতুবা হত্যা করে লাশ গুম করা হতো। গত দুই বছরে তারা অন্তত ২০ জন শিশুর অপহরণের সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করেছে। তবে র‍্যাবের ধারণা অর্ধ শতাধিক শিশু অপহরণ এবং হত্যার সঙ্গে জড়িত এই চক্রের সদস্যরা। র‍্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে শিশু অপহরণ ও পাচারচক্রের সদস্যরা রাজধানী ও সংলগ্ন এলাকা থেকে কীভাবে শিশুদের অপহরণ করত সে তথ্য জানিয়েছে। বলেছে শিশু অপহরণের জন্য তারা রাজধানীর বিভিন্ন বাস, লঞ্চ ও রেলওয়ে স্টেশনে ঘুরে বেড়াত। কোনো শিশু পরিবারের সদস্যদের মধ্য থেকে ভিড়ের মধ্যে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লে তাকে তারা অপহরণ করে সঙ্গে থাকা মাইক্রোবাসে ওঠাত। তারপর ইনজেকশনের মাধ্যমে চেতনানাশক ওষুধ দিয়ে অপহূত শিশুকে অজ্ঞান করে নিজেদের আস্তানায় নিয়ে যেত। সেখানে অপহূত শিশুকে জিম্মি করে অভিভাবকদের কাছ থেকে আদায় করা হতো মুক্তিপণ। স্মর্তব্য, গত ২৭ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ থেকে অপহূত হয় একটি শিশু। র‍্যাব এ ঘটনার সূত্র ধরে তদন্ত চালায়। গত ৭ ফেব্রুয়ারি র‍্যাবের একাধিক টিম একযোগে অভিযান চালিয়ে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন স্থান থেকে ছয় অপরাধীকে গ্রেফতার করে। তাদের কাছ থেকে পিস্তল, ছুরি চেতনানাশক ইনজেকশন, ১৭টি মোবাইল ফোন এবং সহস্রাধিক পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। রাজধানী ও ধারে কাছের এলাকায় তৎপর শিশু অপহরণ চক্রের সদস্য সংখ্যা ২০ থেকে ২৫ বলে র‍্যাবের ধারণা। এ দলের অন্যান্য সদস্যকে আটক করার জন্যও চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। শিশু অপহরণ এবং তাদের মুক্তির বিনিময়ে মুক্তিপণ আদায় কিংবা বিদেশে পাচার নৈতিক দিক থেকে বা আইনগতভাবে একটি বড় অপরাধ। হত্যা জখম আরও বড় অপরাধের পর্যায়ে পড়ে। যারা এ ধরনের অপরাধে জড়িত তাদের বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক সাজার ব্যবস্থা করা হবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর