সোমবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

সরিষার মধ্যে ভূত

ইয়াবা ব্যবসায়ী পুলিশ সোর্সদের ধরুন

ইয়াবা নামের মাদক দেশের যুবসমাজকে যে সর্বনাশের দিকে ঠেলে দিচ্ছে এ বিষয়ে সংশয়ের কোনো সুযোগ নেই। মাদকসেবীদের সিংহভাগই ইয়াবায় আসক্ত এবং মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এ মাদক নিয়ন্ত্রণকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন। কিন্তু ভূত তাড়াতে যে সরিষার দরকার তাতেই ভূত থাকায় সবকিছু পণ্ড হতে চলেছে। অপরাধ দমনে পুলিশের সোর্স হিসেবে যারা কাজ করে তাদের সিংহভাগ ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়ায় ভয়াবহ এ মাদকের আগ্রাসন বন্ধ করা কঠিন হয়ে পড়ছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে রাজধানীতে ইয়াবা ব্যবসায় পুলিশের প্রায় দুই হাজার সোর্স জড়িত। কোথাও তারা নিজেরা সরাসরি, আবার কোথাও লোক দিয়ে চালাচ্ছে এ মাদক ব্যবসা। পুলিশের সঙ্গে সম্পর্ক থাকায় এই নব্য ব্যবসায়ীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকছে। অন্যান্য মাদক ব্যবসার মতো পাড়া-মহল্লায় ইয়াবার কোনো নির্দিষ্ট স্পট নেই। মোবাইল ফোনেই এ ব্যবসা পরিচালিত হয়। আগে ভ্রাম্যমাণ ইয়াবা ব্যবসায়ীদের শুধু চিনত সেবনকারীরা। ধীরে ধীরে পুলিশের সোর্সরাও তাদের চিনতে শুরু করে। ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বখরা আদায় করতে করতে একপর্যায়ে পুলিশের সোর্সরা ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে ও এর নিয়ন্ত্রকে পরিণত হয়। রাজধানীতে পুলিশের সোর্সদের ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক। সোর্সদের সম্পৃক্ততার কারণে ইয়াবা ব্যবসার প্রসার ঘটেছে স্পুটনিক গতিতে। আগে থানা পুলিশ পাড়া-মহল্লায় অভিযান চালিয়ে ইয়াবা উদ্ধার করলেও সরিষার মধ্যে ভূত থাকায় বর্তমানে উদ্ধারের ঘটনা খুব একটা নেই বললেই চলে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মাদক প্রতিরোধে কমিটি গঠন করেও ফলাফল শূন্য থাকছে। ইয়াবাসহ সব ধরনের মাদক আগ্রাসন বন্ধে এ ব্যবসার সঙ্গে পুলিশ বা মাদক অধিদফতরের সোর্সদের সংশ্লিষ্টতা বন্ধ করতে হবে। সোর্সদের ওপর তীক্ষ নজর রেখে যারা মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। বিদেশ থেকে মাদক চোরাচালান রোধে আরও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি এ ব্যবসার পৃষ্ঠপোষকদেরও আইনের আওতায় আনার প্রয়াসও চালানো দরকার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর