রবিবার, ১২ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

আখেরাতে ব্যভিচারীদের কঠিন সাজা পেতে হবে

মাওলানা মুহাম্মদ শাহাবুদ্দিন

বিবাহবহির্ভূত দৈহিক সম্পর্ককে ইসলামে জঘন্য অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। পারিবারিক জীবনে বিশ্বস্ত হওয়ায় মুসলিম সমাজ এইডস, এইচআইভিসহ যৌনবাহিত রোগ থেকে তুলনামূলকভাবে মুক্ত। হজরত আবু হোরায়রা (রা.) বর্ণিত, রসুল (সা.) বলেছেন, ‘হাশরের দিন আল্লাহ তিন শ্রেণির লোকের সঙ্গে কথা বলবেন না, তাদের প্রতি দৃষ্টিপাত করবেন না। তাদের পবিত্রও করবেন না। তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি সুনির্ধারিত হয়েছে। তারা হচ্ছে— (১) ব্যভিচারী বৃদ্ধ, (২) মিথ্যাবাদী শাসক এবং (৩) অহংকারী দরিদ্র লোক।— মুসলিম, নাসায়ী।

সাহাবি ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, আমি জানতে চাইলাম, হে আল্লাহর রসুল (সা.)! আল্লাহর কাছে সবচেয়ে জঘন্য গুনাহ কী? তিনি বলেন, ‘কাউকে তোমার সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর সমকক্ষ মনে করা।’ আমি বললাম, এ তো জঘন্য গুনাহ, এরপর কোনটি? তিনি বললেন, সন্তান তোমার জীবিকায় অংশীদার হবে— এ ভয়ে তাকে মেরে ফেলা। আমি বললাম, এরপর কোনটি? তিনি বললেন, প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়া। অনন্তর মহান আল্লাহপাক এর সপক্ষে এ আয়াত নাজিল করেন— ‘আর যারা আল্লাহর সঙ্গে অন্য উপাস্যের ইবাদত করে না, আল্লাহ যার হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন সঙ্গত কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচারে লিপ্ত হয় না। এগুলো যারা করে তারা মহাপাপে লিপ্ত। হাশরের দিন তাদের শাস্তি দ্বিগুণ করা হবে। তারা সর্বদা অবমাননাকর এ শাস্তি ভোগ করতে থাকবে। তবে যারা তওবা করেছে তাদের কথা স্বতন্ত্র।

এখানে বিশেষভাবে লক্ষণীয়, প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়াকে আল্লাহর তাওহিদ বা একাত্মবাদ এবং অবৈধ নরহত্যার সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে।

বোখারিতে সামুরা বিন জুনদুর (রা.) কর্তৃক বর্ণিত। রসুল (সা.)-এর স্বপ্নের বর্ণনা সংবলিত হাদিসে উল্লেখ রয়েছে, জিবরাইল ও মিকাইল (আ.) রসুল (সা.)-এর কাছে এলেন— রসুল (সা.) বলেন, ‘আমি তাদের সঙ্গে অগ্রসর হলাম। চলতে চলতে বড় চুল্লির মতো একটি বস্তুর কাছে এসে পৌঁছলাম, যার উপরিভাগ সংকীর্ণ এবং নিম্নাংশ স্ফীত। ভিতরে বহু উলঙ্গ নারী-পুরুষ দেখতে পেলাম, নিচ থেকে কিছু সময় পর পর অগ্নিশিখা এসে তাদের ওপর দাউ দাউ করে জ্বলছিল, আর তারা সে আগুনের তীব্র উত্তাপ ও দহনে বিকটভাবে চিৎকার করছিল। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ওহে জিবরাইল! এরা কারা? তিনি বললেন, এরা ব্যভিচারী পুরুষ ও ব্যভিচারিণী নারী। তাদের ওপর এ শাস্তি কেয়ামত পর্যন্ত চলতে থাকবে।’—বুখারি।

লেখক :  ইসলামী গবেষক

সর্বশেষ খবর