বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

জনসংখ্যা ও কর্মক্ষমতা

উন্নয়নের পাথেয় হিসেবে ব্যবহৃত হোক

বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ তরুণ জনগোষ্ঠী। আগামী ২৫ থেকে ৩০ বছরের তরুণরাই জনসংখ্যার বড় অংশ হিসেবে উৎপাদনশীলতায় ভূমিকা পালন করবে। তারপর দেখা দেবে বয়স্কদের সংখ্যাধিক্য। বাংলাদেশকে সামনের দিকে জোর কদমে এগোতে হলে তরুণ জনগোষ্ঠীকে পরিকল্পিতভাবে ব্যবহার করতে হবে। জনসংখ্যা ও উন্নয়ন বিশেষজ্ঞদের মতে, চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া তরুণ জনগোষ্ঠীর ওপর ভর করে উন্নয়নের ক্ষেত্রে দ্রুত এগিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। কোনো দেশের জনসংখ্যার মধ্যে তরুণদের সংখ্যাধিক্যকে ‘জনসংখ্যা সুবিধা’ হিসেবে দেখা হয়। এ সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে জাতি দ্রুত এগিয়ে যেতে সক্ষম হয়। বাংলাদেশ জনসংখ্যার ক্ষেত্রে যে সোনালি অধ্যায়ে পা দিয়েছে তা যে কোনো জাতির জন্য কাঙ্ক্ষিত। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি দেশের জনসংখ্যার ৬৬ ভাগ উপার্জনক্ষম অর্থাৎ ১৫ থেকে ৬০ বছর বয়সী। যাদের সংখ্যা ১০ কোটি ৫৬ লাখ। ভোক্তার চেয়ে উৎপাদক শ্রেণির সংখ্যাধিক্য একটি জাতিকে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সহায়তা করে। স্মর্তব্য, বাংলাদেশে ৬০ বছরের বেশি বয়সী মানুষের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার মাত্র ৭ শতাংশ, যা চীন, জাপানসহ যে কোনো উন্নত দেশের চেয়েও সুবিধাজনক অবস্থানে রেখেছে বাংলাদেশকে। বিভিন্ন জরিপ ও গবেষণা অনুযায়ী, বর্তমানে চীনে নির্ভরশীল বা ৬০ বছর বয়সী মানুষের হার ১৫ শতাংশের বেশি, যা ২০২০ সালে গিয়ে ১৭ শতাংশে উন্নীত হবে। আর বর্তমানে জাপানের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৩ শতাংশ মানুষের বয়স ৭৫ বছর বা এর চেয়ে বেশি। রেডিও রাশিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাপানের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষের বয়স ৬৫ বছরের বেশি। ইউরোপের জার্মানি ও ইতালিতে এ সংখ্যা প্রায় এক-পঞ্চমাংশ ছাড়িয়েছে। বাংলাদেশে বয়স্ক লোকের সংখ্যা কম হওয়ায় কর্মক্ষমতার দিক থেকে বাংলাদেশের মানুষই এগিয়ে। সরকার ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। জনসংখ্যার এ সুবিধাকে কাজে লাগাতে পারলে সে লক্ষ্য পূরণ করা সম্ভব হবে। অন্যদিকে ব্যর্থ হলে বাংলাদেশকে শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তির ওপর দাঁড় করানো অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। তাই উপার্জনক্ষম তরুণ জনগোষ্ঠীকে ভালো উপার্জনকারীতে পরিণত করা সরকারের লক্ষ্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত। এ উদ্দেশে সব জাতীয় পরিকল্পনাকে সাজাতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর