রাজধানীর আশকোনায় নির্মাণাধীন র্যাব প্রধান কার্যালয়ে গত শুক্রবারের আত্মঘাতী জঙ্গি হামলার ঘটনাকে অশনি সংকেত হিসেবে দেখা হচ্ছে। আগের দিন বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে এক নারী জঙ্গি গ্রেফতার এড়াতে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আত্মঘাতী হয়। পর পর দুই দিন দুই জঙ্গির আত্মঘাতী হওয়ার মাধ্যমে নব্য জেএমবির সদস্যদের বেপরোয়া মনোভাবের প্রকাশ ঘটেছে। জঙ্গিবাদের সূতিকাগার ইরাক সিরিয়াসহ সারা দুনিয়ায় কোণঠাসা হয়ে পড়েছে উগ্র ধর্মীয়পন্থার অনুসারীরা। বাংলাদেশে তাদের অবস্থা তুলনামূলকভাবে আরও নাজুক। বাংলাদেশের মানুষ ধর্মভীরু হলেও ঐতিহ্যগতভাবে চরমপন্থার বিরোধী। যে কারণে জঙ্গিবাদ পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়া, নাইজেরিয়াসহ বিভিন্ন দেশে পায়ের নিচে মাটি পেলেও বাংলাদেশে পায়নি। এ দেশে জঙ্গিবাদের চর্চার সঙ্গে জড়িত বিবেক বিক্রীত কিছু লোক। দেশ ও জাতির প্রতি তাদের যেমন কোনো অঙ্গীকার নেই, তেমন ইসলামী দর্শনের সঙ্গেও নেই দূরতম সম্পর্ক। ইসলামে আত্মঘাতী হওয়া গুরুতর গোনাহ এবং এ ধরনের অপরাধীর জন্য দোজখই সুনির্দিষ্ট ঠিকানা। পবিত্র ধর্মের অপব্যাখা দিয়ে যারা যুবকদের মগজ ধোলাইয়ের মাধ্যমে ইসলাম পরিপন্থী পথে ঠেলে দিচ্ছে, তারা কোনোভাবেই পবিত্র ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করে না। দেশের সাধারণ মানুষ এবং আলেম সমাজের সমর্থন না থাকায় বিপথগামীরা নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেওয়ার জন্য আত্মঘাতী হওয়ার পথ বেছে নিয়েছে। চট্টগ্রামে শিশু সন্তানসহ এক নারীর আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনা প্রমাণ করেছে ধর্মের বিকৃত ব্যাখ্যা একজন মাকে কিরকম হূদয়হীন হতে উদ্বুদ্ধ করে। আত্মঘাতী জঙ্গি হামলার পর সারা দেশে রেড এলার্ট জারি করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বুলেট প্রুফ জ্যাকেট ও হেলমেট পরে দায়িত্ব পালনসহ বাড়তি সতর্কতা পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সম্ভাব্য জঙ্গি হামলা রোধে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তায় বাড়তি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ পদক্ষেপ প্রশংসাযোগ্য। তবে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে নাগরিক সচেতনতার গুরুত্ব আরও বেশি। এ ক্ষেত্রেও সবার সতর্ক ভূমিকা নিশ্চিত করতে হবে।