শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

মানুষ ক্ষেপানো সিদ্ধান্ত

এ হঠকারিতার অবসান হওয়া উচিত

দেশবাসীর সেবায় তাদেরই ট্যাক্সের টাকায় সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তাদের পোষা হয়। কিন্তু সে দায়বোধ বেমালুম ভুলে মানুষের সেবার বদলে তাদের ভোগান্তি বাড়িয়ে লাভবান হওয়াকে কেউ কেউ কর্তব্য হিসেবে বেছে নেন। ভূমি মন্ত্রণালয়ের একটি চিঠির প্রতিক্রিয়ায় রাজধানীর ১৫ লাখ মানুষের মধ্যে যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে তা এখন বিস্ফোরণের অপেক্ষায় বললেও কম বলা হবে। এ চিঠির কারণে জমির খাজনা দিতে পারছেন না নগরীর জোয়ারসাহারা, শাহজাদপুর, খিলক্ষেত, নূরের চালা, কুড়িল, ভাটারা, নয়ানগর, কালাচাঁদপুর, জগন্নাথপুর, নর্দা, কুড়াতলী ও বাড্ডার বাসিন্দারা। সিএস থেকে মহানগর ভূমি রেকর্ড, দখল, দলিল-পর্চা সবকিছু থাকার পরও নামজারিতে আপত্তি তোলা হচ্ছে। স্মর্তব্য, ২০১৩ সালে ভূমি মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে এসব এলাকার খাজনা ও নামজারি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, ২০০০ সালের ১২ মার্চের ১১৭ স্মারকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পরিপত্রে এসব এলাকার খাজনা ও নামজারির বিষয়ে আপত্তি রয়েছে। ওই এলাকার জমির অবমুক্তকরণ গেজেট প্রকাশ না করা পর্যন্ত খাজনা কিংবা নামজারি করা যাবে না। এসব জমির অধিগ্রহণ অবমুক্ত করার ব্যাপারে বিভিন্ন সময়ে ক্ষমতায় থাকা একাধিক রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত সত্ত্বেও একটি মীমাংসিত বিষয়কে রাজউক চেয়ারম্যান ও জেলা প্রশাসক উসকে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ১৭ মার্চ রাউজক চেয়ারম্যান ও জেলা প্রশাসকের যৌথ প্রতিবেদনে অধিগ্রহণকৃত উল্লিখিত জমিজমা অবমুক্ত করার মতো নয় বলে যে অভিমত ব্যক্ত করা হয়েছে তা পুরো এলাকার জনমনে ক্ষোভের আগুন সৃষ্টি করেছে। এলাকাবাসী বাপ-দাদার জমি রক্ষায় আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। স্মর্তব্য, এ এলাকার জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে ১৯৮৯ সালে মানুষ রাজপথে নেমে আসে। সে আন্দোলন দমনে পুলিশ গুলি চালালে হতাহতের ঘটনাও ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট এরশাদ সব জমি অবমুক্তের ঘোষণা দেন। পরবর্তীতে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদও এ ব্যাপারে লিখিত নির্দেশ দেন। ১৯৯৪ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াও ঘোষণা দেন বাড্ডা এলাকায় কোনো অধিগ্রহণ ও উচ্ছেদের ঘটনা ঘটবে না।  একটি মীসাংসিত বিষয়ে হঠাৎ করে বাগড়া দেওয়ার যে ভুল সিদ্ধান্ত রাজউক চেয়ারম্যান ও ঢাকার জেলা প্রশাসক নিয়েছেন তা দুর্ভাগ্যজনক।  মানুষ ক্ষেপানো এ হঠকারিতার অবসান হওয়া উচিত।

সর্বশেষ খবর