শিরোনাম
শুক্রবার, ২৬ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

আল্লাহ ছাড়া কেউ সর্বজ্ঞ ও সর্বজ্ঞানী নয়

আল্লামা মাহমূদুল হাসান

আল্লাহর একটি গুণ ‘আলীম’ অর্থাৎ আল্লাহ সর্বজ্ঞ এবং সর্বজ্ঞানী। তার অগোচর এবং অজানা বলতে কিছু নেই। মানুষের ভিতর-বাহির বর্তমান-ভবিষ্যৎ সব বিষয় সম্পর্কে তিনি জ্ঞাত। এই গুণটা পৃথিবীর কারও নেই। নবীরও নেই। আল্লাহপাক অনেক বিষয় ওহির মাধ্যমে ও এলহামের মাধ্যমে আমাদের নবী ও অন্যান্য নবীকে জানিয়ে দিয়েছেন। এগুলোই তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করে গেছেন। এগুলোই তিনি জানতেন কোরআনের মধ্যে এসেছে— হে নবী! অতীতের কথাগুলো, অদৃশ্যের অনেক কথা আমি আল্লাহ আপনাকে জানিয়ে দিলাম।

সুতরাং এগুলো নবীর এলমে গায়েব নয়, বরং আল্লাহ তাঁকে জানিয়েছেন বিধায় তিনি জেনেছেন। এখন কিছু লোক যদি বলে যে, বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পৃথিবীর সব খবর জানতেন। তাঁর অজানা কিছুই ছিল না। যে পরিমাণ আল্লাহপাক জানেন সে পরিমাণ তিনি জানেন, তাহলে জিজ্ঞেস করতে হবে যে, তুমি এটা কি বললে? যদি বলে, তার জানার অর্থ আল্লাহ জানিয়েছেন বলে তিনি জানেন। আমার উদ্দেশ্যও সেটা। তাহলে তাকে কাফের বলা যাবে না। তাকে বলতে হবে, তোমার উপস্থাপনা ভুল হয়েছে। এভাবে আর কখনো বলবে না। আর যদি বলে যে, আল্লাহ এবং তার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। আহমদ আল্লাহর রসুলের নাম, আহাদ আল্লাহর নাম। মীম উঠিয়ে দিলেই এক হয়ে যায়। কালেমায়ে তাইয়্যেবা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহর যে অর্থ মুহাম্মদুর রসুলুল্লাহর একই অর্থ। অদৃশ্যে থাকলে আল্লাহ, প্রকাশ হয়ে দুনিয়ায় এলে মুহাম্মদ। এটা খ্রিস্টানদের আকিদা। কেউ যদি এমন আকিদা পোষণ করে তাহলে সে ব্যক্তি কাফের। সে তো নবীকে আল্লাহর আসনে বসিয়েছে। যেমন খ্রিস্টানরা যিশুকে ইলাহ বানিয়েছে।

আল্লাহ আমাদের মুসলিম জাতিকে হেদায়েতের ওপর রাখুন! কারণ, মুসলমানরা তাদের নবীকে কখনো ইলাহ হিসেবে আখ্যায়িত করেনি, তার কবরে কেউ সিজদাও করে না। সেখানে এমন ব্যবস্থা রাখা হয়েছে যে, কেউ সেজদা করতে চাইলেও করতে পারে না। আল্লাহ তাকে হেফাজত করেছেন।

তিনি ইন্তেকালের আগে সাহাবিদের ডেকে কেঁদে কেঁদে বলে গেছেন, তোমাদের একটা কথা বলে যাই— তোমাদের পূর্বের উম্মতরা ধ্বংস হয়েছে কেন জান? সাহাবাগণ বললেন, না, ইয়া রসুলাল্লাহ। রসুলুল্লাহ বললেন, তারা নবী ও নেককার লোকের মুহব্বতে তাদের কবরে পাকা ঘর বানিয়েছে, মসজিদ বানিয়েছে। এরপর কবরে সেজদা করা শুরু করেছে। এভাবে ইহুদি খ্রিস্টান সমাজে প্রভুত্ব মানুষের মধ্যে চলে এসেছে। ফলে তারা ধ্বংস হয়ে গেছে। এক যুগে খ্রিস্টানরা সত্যের অনুসারী ছিল। আল্লাহর একত্ববাদ প্রতিষ্ঠার জন্য তারাও যুদ্ধ করেছে। কিন্তু তারা তাদের আদর্শের ওপর থাকতে পারেনি।  রসুলের প্রতি মুহাব্বত দেখিয়ে তাঁকেই তারা খোদা মনে করে বসেছে। এক যুগে ইহুদিরাও আল্লাহর একত্ববাদের জন্য আন্দোলন করেছে। তারাই পরে নবীর মুহাব্বতে ওযাইর (আ.)-কে খোদা মনে করে বসেছে। এভাবে ইহুদি-খ্রিস্টান আল্লাহর অস্তিত্বের সঙ্গে শিরক করে ধ্বংস হয়েছে।

লেখক : খতিব, গুলশান সেন্ট্রাল জামে মসজিদ, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর