সোমবার, ১২ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

জঘন্য অপরাধ মানব পাচার

অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত হোক

মানব পাচার একটি বৈশ্বিক সমস্যার নাম। বিশ্বের গরিব দেশগুলো এ সমস্যার নিত্যকার শিকার। বাংলাদেশের মানুষও তার ব্যতিক্রম নয়। মানব পাচারকারীদের পাল্লায় পড়ে এ দেশের শত শত শিশু মধ্যপ্রাচ্যে উটের দৌড় প্রতিযোগিতায় জকি হতে বাধ্য হয়েছে। এদের কেউ কেউ দৌড় প্রতিযোগিতার সময় আতঙ্কে প্রাণ হারিয়েছে। ইউরোপে কর্মসংস্থানের আশায় ঝুঁকিপূর্ণ পথে ভূ-মধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার সময় অনেকে প্রাণ হারিয়েছে জাহাজ বা নৌকাডুবিতে। সাহারা মরুভূমি পাড়ি দিতে গিয়ে বেঘোরে প্রাণ হারিয়েছে অনেক যুবক। মালয়েশিয়ায় চাকরির আশায় অবৈধ পথে সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে ট্রলার ডুবিতে কত মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে তার হিসাব নেই। পাচারকারীদের পাল্লায় পড়ে থাইল্যান্ডের গহিন জঙ্গলে পণবন্দী হয়ে জীবন দান কিংবা ক্রীতদাসের জীবন বরণ করার ঘটনাও কম নয়। বাংলাদেশের প্রতি ২০ অন্তত জনের একজন এখন বিদেশে কর্মরত। বিদেশে ৮০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছে। এ ব্যাপারে জনশক্তি রপ্তানির সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর অবদান যেমন অনস্বীকার্য তেমন আদম ব্যাপারি নামের প্রতারকদের প্রতারণাও অনেক বিয়োগান্তক ঘটনার জন্ম দিয়েছে। বিদেশে চাকরি দেওয়ার নাম করে লাখ লাখ টাকা নিয়ে উধাও, বিদেশে নিয়ে চাকরি না দিয়ে প্রতারণা শুধু নয়, জীবন কেড়ে নেওয়ার ঘটনাও অনেক ঘটেছে। সাম্প্রতিক সময়ে জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে দুর্নীতি তুলনামূলকভাবে হ্রাস পেলেও থেমে নেই মানব পাচারের ঘটনা। টেকনাফ থেকে ট্রলারে থাইল্যান্ড হয়ে মালয়েশিয়া যাওয়ার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ হওয়ায় রুট পরিবর্তন করেছে মানব পাচারকারীরা। এখন আকাশপথে চীন গিয়ে সেখান থেকে নৌকায় করে সাগর পথে মানব পাচার করা হচ্ছে। আকাশ পথে ইন্দোনেশিয়ায় নিয়ে সেখান থেকে নৌকায় অস্ট্রেলিয়া পাঠানোর ঘটনাও আগের তুলনায় বেড়েছে। লিবিয়া থেকে নৌকায় ইউরোপে যাওয়ার ঘটনা বেড়েছে ব্যাপকভাবে । চলতি বছর বিশ্বের যে কোনো দেশের চেয়ে বেশি বাংলাদেশি শরণার্থী হিসেবে নৌকায় করে ইতালি গিয়ে আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন।  মানব পাচার একটি জঘন্য অপরাধ। এ ঘৃণ্য অপরাধে যারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করে বিচারের মাধ্যমে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে এমনটিই কাম্য।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর