শিরোনাম
সোমবার, ৩ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

ব্লাসফেমি

অ্যাডভোকেট সিরাজ প্রামাণিক

ব্লাসফেমি আর মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ যেন সমার্থক কথা। পোলিশ বিজ্ঞানী কোপারনিকাসের সেই ‘দ্য রেভোলিওশনিবাস’ বইটির অনেকের মনে থাকার কথা। তাঁর লেখা বইটি ধর্মের বিরুদ্ধে যাওয়ায় গির্জার পাদ্রিরা বইটিকে নিষিদ্ধ করে দেয়। কারণ ওই বইটিতে লেখা ছিল পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘোরে, কিন্তু বাইবেলে লেখা ছিল পৃথিবীর চারদিকে সূর্য ঘোরে। ১৫৪৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি তিনি মারা যান। এরপর ইতালীয় বিজ্ঞানী জিয়দারনো ব্রুনো সেই অপ্রকাশিত সত্য উদ্ঘাটন করেন এবং তা তিনি প্রচার করতে শুরু করেন। এ কারণে তার প্রতি ধর্মযাজকরা ক্ষিপ্ত হন এবং কঠোর শাস্তি প্রদানের উদ্যোগ নেন। বাধ্য হয়ে ইতালি ছেড়ে তিনি সুইজারল্যান্ডে যান, সেখানেও তিনি একই কারণে বহিষ্কৃত হন। পোপের নির্দেশে একের পর এক দেশ ব্রুনোর জন্য নিষিদ্ধ হয়ে যায়। এ সময় পোপের এক গুপ্তচর এক মিথ্যা প্রলোভন দিয়ে ব্রুনোকে ইতালিতে নিয়ে আসে। ১৫৯২ সালের ২৩ মে বিজ্ঞানী ব্রুনোকে বন্দী করে তার ওপর শুরু হয় নির্যাতন, টানা আট বছর ধরে সিসের ছাদের নিচে রেখে বিচারের নামে প্রহসন চালায়, শেষে বিচারের রায় হলো ‘পবিত্র গির্জার আদেশে পাপী ব্যক্তির এক বিন্দুও রক্ত নষ্ট না করে হত্যা। অর্থাৎ আগুনে পুড়িয়ে হত্যা। ১৬০০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ব্রুনোকে নিয়ে যাওয়া হলো এক বধ্যভূমিতে। তার জিভ শক্ত করে বাঁধা ছিল, যাতে শেষবারের মতোও তার আদর্শের কথা না বলতে পারে, আগুনে পুড়িয়ে এ বধ্যভূমিতে বিজ্ঞানী ব্রুনোকে হত্যা করা হয়। এখানেই শেষ নয়, ব্রুনোর পর ব্লাসফেমির আরেক শিকার বিজ্ঞানী গ্যালিলিও তার শেষ আটটি বছর কারাগারে দিন কাটান এবং সেখানে তার মৃত্যু হয়।

     লেখক : আইনজীবী।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর