সোমবার, ৩ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ জট

সমস্যা নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ কাম্য

জাহাজ ও কন্টেইনার জটে নাকাল অবস্থায় পড়েছে দেশের অর্থনীতির ‘পাইপ লাইন’ নামে খ্যাত চট্টগ্রাম বন্দর। ঈদের ছুটি, ব্যাপক হারে পণ্য আমদানি এবং লাগাতার প্রাকৃতিক দুর্যোগে দেশের বৃহত্তম এ সামুদ্রিক বন্দরটি ত্রিশঙ্কু অবস্থার শিকার। বর্তমানে বন্দরের জেটি ও বহির্নোঙরে অন্তত ১০০ জাহাজ পণ্য খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে। ঈদের ছুটি এবং টানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে জাহাজ ও কন্টেইনারের যে ভয়াবহ জট তৈরি হয়েছে সে সমস্যা থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। জটের কারণে চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার খালাসের জায়গা পাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে। দেশের তৈরি পোশাক খাতে এ জটের প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বন্দরে অতিরিক্ত অবস্থানের কারণে কন্টেইনার জাহাজ পরিচালনাকারীদের খরচ বাড়ছে। কন্টেইনারে নির্ধারিত সময়ের বেশি পণ্য রাখার জন্য আমদানিকারকদের বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোকে জরিমানা দিতে হবে। আমদানি করা কাঁচামাল বিলম্বে পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হবে বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান। স্মর্তব্য, প্রতি বছর ঈদের পাশাপাশি বাজেট সামনে রেখে দেশে পণ্য আমদানির পরিমাণ বেড়ে যায়। ঈদ ও বাজেট ভিন্ন সময়ে হলে তা বন্দরের ওপর খুব একটা প্রভাব ফেলে না। এ বছর একই সময়ে বাজেট ও ঈদ হাজির হওয়ায় ভিন্ন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে যুক্ত হয়েছে টানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ। ঈদের আগে ব্যস্ত সময়ে ঘূর্ণিঝড় মোরার কারণে আড়াই দিন বন্ধ ছিল বন্দরের কার্যক্রম। মোরার বিপর্যয় কাটিয়ে না উঠতেই দেখা দেয় নিম্নচাপ ও প্রবল বর্ষণ। ৩৬ হাজার ৩৫৭টি ধারণক্ষমতার এ বন্দরের বিভিন্ন ইয়ার্ডে বর্তমানে কন্টেইনার রয়েছে সাড়ে ৩৬ হাজার। নিয়ম অনুযায়ী যন্ত্রপাতি চলাচলের জন্য ধারণক্ষমতার অন্তত ৩০ শতাংশ জায়গা খালি রাখতে হয়। কিন্তু তা মানা সম্ভব হচ্ছে না কন্টেইনারের মাত্রাতিরিক্ত চাপ থাকার কারণে। কন্টেইনার জটের পাশাপাশি বন্দরে ছুটির কারণে দেখা দিয়েছে জাহাজজটও। স্বাভাবিক সময়ে চট্টগ্রাম বন্দরের প্রধান জেটি এবং বহির্নোঙরে ৬০ থেকে ৭০টি জাহাজের অবস্থান থাকলেও বর্তমানে জাহাজ রয়েছে প্রায় ১০০। জাহাজ জটের কারণে মালামাল খালাস বিলম্বিত হওয়ায় ব্যবসায়ীদের বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে। এ বাড়তি টাকা ভোক্তাদের পকেট থেকে শেষ পর্যন্ত আদায় করতে বাধ্য হবে ব্যবসায়ীরা। দেশের অর্থনীতির স্বার্থে চট্টগ্রাম বন্দরের কন্টেইনার ও জাহাজ জট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।

সর্বশেষ খবর