বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

ধস নেমেছে চামড়ার দামে

ভারতে পাচার হওয়া ঠেকাতে হবে

ট্যানারি মালিক সিন্ডিকেটের কারসাজিতে গত দুই বছরের মতো এ বছরও চামড়ার দামে ধস নেমেছে। গত বছরের চেয়েও এবার ৩০ শতাংশ কম দামে চামড়া কিনেছেন ট্যানারি মালিকরা। এক লাখ টাকা দামের গরুর চামড়া এবার বিক্রি হয়েছে ৮০০ থেকে এক হাজার টাকায়। গত দুই বছরের ধারাবাহিকতায় এ বছরও দাম কম হওয়ায় পর পর তিন বছর মৌসুমি ব্যবসায়ীরা লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছেন। চামড়ার দাম কম হওয়ায় তার একাংশ ভারতে পাচার হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার অন্যতম উৎস গবাদিপশুর চামড়া বিদেশে পাচার হয়ে গেলে তা একটি উদ্বেগজনক ঘটনা বলে বিবেচিত হবে। কোরবানির চামড়ার একাংশ এতিমখানায় দান করা হয়। এ দানের ওপর দেশের এতিমখানাগুলো অনেকাংশে নির্ভরশীল। দাম পড়ে যাওয়ায় তারা যে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে তা সহজে অনুমেয়। ট্যানারি মালিকরা চলতি বছর আড়তদারদের পাওনা টাকা সময়মতো পরিশোধ না করায় তারা চামড়া কেনার ক্ষেত্রে সংরক্ষণমূলক অবস্থান নেয়। গত দুই বছরের চেয়েও এ বছর কম দামে চামড়া কেনার সিদ্ধান্ত নেন আড়তদাররা। লবণের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় তারও প্রতিক্রিয়া পড়েছে চামড়ার বাজারে। চামড়া সংরক্ষণে লবণের ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। এ বছর ঈদুল আজহার প্রাক্কালে হঠাৎ করে লবণের দাম বৃদ্ধি করা হয়। বিদেশ থেকে লবণ আমদানি সত্ত্বেও দাম না কমায় বাজারে লবণের সংকট থেকে যায়। চামড়া যেহেতু দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি পণ্য সেহেতু এর সংরক্ষণ এবং ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার জন্য আগেভাগে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ছিল। তা না হওয়ায় বাজারে নানামুখী সংকট সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষত পর পর তিন বছর মৌসুমি ব্যবসায়ীরা লোকসানের শিকার হওয়ায় আগামী বছরও ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হবে সাধারণ মানুষ।  আমরা আশা করব চলমান সংকটে দেশ থেকে কাঁচা চামড়া যাতে ভারতে পাচার না হয়ে যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখা হবে। ভবিষ্যতে ঈদুল আজহার চামড়ার বাজার নিয়ন্ত্রণে ট্যানারি মালিকরা যাতে কারসাজির আশ্রয় নিতে না পারে সে বিষয়েও সতর্কতা অবলম্বন করা হবে। চামড়া সংরক্ষণে দেশে পর্যাপ্ত লবণ উৎপাদন নতুবা বিদেশ থেকে সময়মতো আমদানির ব্যবস্থা নেওয়া হবে এমনটিও কাঙ্ক্ষিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর