মঙ্গলবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কুমির চাষ

বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সহায়ক হবে

কুমিরের চামড়া ও মাংস রপ্তানির মাধ্যমে বছরে হাজার কোটি টাকা আয়ের স্বপ্ন দেখছেন বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কুমির চাষের উদ্যোক্তারা। দেশের রপ্তানি আয় বহুমুখীকরণে কুমির চাষ আশার আলো হয়ে দেখা দেবে এমনটিই ভাবা হচ্ছে। ২০১৪ সালে প্রথমবারের মতো শুরু হয় বিদেশে কুমিরের চামড়া রপ্তানি। গত চার বছরে এ খাতের রপ্তানি আয় ৪ কোটি টাকার মতো। সে হিসাবে হাজার কোটি টাকা রপ্তানির বিষয়টা দিবাস্বপ্নের মতো মনে হতেই পারে। তবে এ ক্ষেত্রে যে সম্ভাবনা হাতছানি দিচ্ছে সে বিষয়টি মাথায় রাখলে স্বীকার করতেই হবে— কুমির চাষ খুলে দিতে পারে বড় অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের দ্বার। দেশে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কুমির চাষ শুরু হয় ময়মনসিংহের ভালুকায়। তারপর বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমে পাহাড়ের চূড়ায় ২৫ একর জমিতে শুরু হয় কুমির চাষ। ময়মনসিংহের প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোগে তিন বছর আগে বিদেশে কুমিরের চামড়া রপ্তানি শুরু হয়। কুমির চাষে আরও একাধিক প্রতিষ্ঠান উদ্যোগ নিলেও চামড়া রপ্তানিও প্রথম শুরু করেছে তারা। প্রতিষ্ঠানটি ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ৩০টি কুমিরের চামড়া রপ্তানি করেছে; যার আর্থিক মূল্য প্রায় চার কোটি টাকা। আগামী বছরের শেষের দিকে দক্ষিণ কোরিয়া ও চীনে রপ্তানি হতে যাচ্ছে এই উভচর প্রাণীর মাংস। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যাপক চাহিদা থাকায় ভবিষ্যতে রপ্তানির অপেক্ষায় রয়েছে মাংস, দাঁত ও হাড়। জাপান, চীন, তাইওয়ান, থাইল্যান্ডসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তা চড়া দামে বিক্রি হয়। এসব দেশে প্রায় ৭০ হাজার মার্কিন ডলার মূল্যমানের কুমিরের মাংসের চাহিদা রয়েছে। দেশের নেতৃস্থানীয় একটি শিল্পগোষ্ঠী বান্দরবানের কুমির চাষ প্রকল্পের উদ্যোক্তা। আগামী বছর নাগাদ অন্তত ৫০০ কুমিরের চামড়ার একটি চালান জাপানে রপ্তানির প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে প্রতি অর্থবছরে ১ হাজার চামড়া রপ্তানিকে তারা টার্গেট হিসেবে বেছে নিয়েছে। থাইল্যান্ড, জাপান, জার্মানি ও চীন কুমিরের চামড়ার পাশাপাশি কুমিরের মাংস নিতেও আগ্রহী। এতে প্রাথমিকভাবে প্রায় ২০০ কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এ থেকে বছরে হাজার কোটি টাকা আয় করা সম্ভব বলেও জানিয়েছেন এ প্রকল্পের সংশ্লিষ্টরা। কুমির চাষ কর্মসংস্থানের যেমন সুযোগ সৃষ্টি করেছে তেমন সৃষ্টি করেছে রপ্তানি আয় বহুমুখীকরণের সম্ভাবনা। এ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে বড় বড় উদ্যোক্তারাও কুমির চাষে এগিয়ে আসবেন— আমরা এমনটিই আশা করতে চাই।

সর্বশেষ খবর