রবিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

মসজিদে জঙ্গি হামলা

প্রমাণ হলো জঙ্গিরা ইসলামের কেউ নয়

ধর্মের অপব্যাখ্যাকারী জঙ্গিরা মিসরের সিনাই প্রদেশে জুমার নামাজের সময় মসজিদে হামলা চালিয়ে কমপক্ষে ২৩৫ জনকে হত্যা করেছে। বর্বর এ হামলায় আহত হয়েছেন অন্তত ১৬০ মুসল্লি। ওয়াহাবি উগ্রবাদে বিশ্বাসী আইএসসহ জঙ্গি সংগঠনগুলো শুধু নিজেদেরই মুসলমান মনে করে। তাদের দৃষ্টিতে শিয়া সুফিবাদী সবাই কাফের। জুমার নামাজ আদায়রত মুসল্লিদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে তারা সে প্রতিহিংসাবাদী মনোভাবের পরিচয় রেখেছে। সিনাইয়ের বির আল আবেদ শহরের আল বাওদা মসজিদটি সুফিসাধকদের অন্যতম মিলনকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। জুমার নামাজ উপলক্ষে গত শুক্রবার মসজিদে জড়ো হয়েছিলেন বিপুল সংখ্যক মুসল্লি। জঙ্গিরা চারটি গাড়ি করে মসজিদের সামনে জড়ো হয় এবং মুসল্লিদের লক্ষ্য করে নির্বিচারে গুলি চালায়। মুসল্লিরা প্রাণ বাঁচাতে পালানোর চেষ্টা করলে পলায়নরতদের ওপরও গুলি চালানো হয়। মিসরে ২০১৩ সালের সেনা অভ্যুত্থানে প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মুরসি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দেশজুড়ে সংঘাত দেখা দেয়। ইসলামের গোড়া তত্ত্বের অনুসারী মুরসির পতন জঙ্গিবাদ বিস্তারের সুযোগ সৃষ্টি করে। মিসরের সিনাইয়ে থাবা বিস্তারে সক্ষম হয় জঙ্গি সংগঠন ইসলামী স্টেট বা আইএস। গত শুক্রবারের ঘটনাকে সে দেশে এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় জঙ্গি হামলা হিসেবে মনে করা হচ্ছে। মসজিদে জুমার নামাজে জঙ্গি হামলার ঘটনা প্রমাণ করেছে মুখে খেলাফত তথা ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠার কথা বললেও জঙ্গি তত্ত্বে বিশ্বাসীরা ইসলামের কেউ নয়। জিহাদের নামে তারা দেশে দেশে সাধারণ মুসলমানদের হত্যা করাকে কর্তব্য হিসেবে বেছে নিয়েছে। ইসলামের নামে জঙ্গিবাদের বিকাশ ঘটিয়ে শান্তি ও কল্যাণের ধর্ম ইসলাম সম্পর্কে ভুল ধারণা সৃষ্টি করছে। ওয়াহাবিতন্ত্রে বিশ্বাসী, ইসলামের এই অপব্যাখ্যাকারীরা এতটাই অধঃপতিত মানসিকতায় ভুগছে যে মসজিদের মতো পবিত্র স্থানে হামলা চালানোকেও তারা পুণ্যের কাজ বলে ভাবছে। ইসলাম ও মানবতার শত্রু হিসেবে আবির্ভূত জঙ্গিবাদের নোংরা দৈত্যকে ঠেকাতে দুনিয়ার সব দেশের মুসলমানদের সচেতন হতে হবে। জঙ্গিবাদের নামে যারা ইসলামের মহৎ পরিচিতিতে কলঙ্ক লেপনের চেষ্টা করছে তাদের রুখতে আলেম উলেমাদের অগ্রণী ভূমিকাও সময়ের দাবি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর