রবিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

সৎ কাজ করা এবং অন্যকে তাগিদ দেওয়া কর্তব্য

মুহাম্মাদ ওমর ফারুক

সৎ কাজ করা এবং অন্যকে তাগিদ দেওয়া কর্তব্য

সৎ কাজে রয়েছে অশেষ পুণ্য। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করা হয়েছে ‘তোমরা হলে উত্তম জাতি, তোমাদের মানব জাতির কল্যাণে সৃষ্টি করা হয়েছে। তোমরা সৎ কাজের আদেশ দিবে এবং অসৎ কাজে নিষেধ করবে। আর আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে। (সূরা আলে ইমরান : ৭৭) নামাজ, রোজা, জাকাত, হজ ইত্যাদি ফরজ ইবাদত— যা কোনোভাবেই উপেক্ষার সুযোগ নেই। উপরোক্ত আয়াতে ফরজ সব ইবাদতের পাশাপাশি জীবনের সর্বক্ষেত্রে সৎকাজের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। অন্যকে সৎকাজ করা এবং অসৎ কাজে বিরত রাখারও তাগিদ দেওয়া হয়েছে। বাবা-মায়ের সেবাযত্ন, সন্তান-সন্ততি প্রতিপালন, স্ত্রীর প্রতি স্বামী হিসেবে দায়িত্ব পালন, পাড়া প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজনের প্রতি সামাজিক কর্তব্য পালনও প্রতিটি মুমিনের কর্তব্য এগুলো সৎ কাজের অন্তর্ভুক্ত এবং এ জন্য রয়েছে আল্লাহর পক্ষ থেকে অশেষ পুণ্য।

হজরত আবু যার (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, প্রতিবার তাসবিহ (সুবহানাল্লাহ) বলা একটি সদকা, প্রতিবার তাহিমদ (আলহামদুলিল্লাহ) বলা  একটি সদকা, ভালো কাজের নির্দেশ দান একটি সদকা, খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়াও একটি সদকা। (মুসলিম থেকে মিশকাতে)

পৈতৃক সম্পত্তিতে সন্তানের উত্তরাধিকার ইসলামী অনুশাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। এটি একটি মানবাধিকার হিসেবেও বিবেচিত। সন্তানদের অসচ্ছল রেখে সম্পদ ধর্মীয় কাজে ব্যয়ও রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিরুৎসাহিত করেছেন।

হজরত সাদ এবনে ওয়াক্কাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, বিদায় হজের বছর আমি কঠিন ব্যথায় আক্রান্ত হয়ে পড়লে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে দেখতে এলেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রসুল! আমার রোগ-যন্ত্রণা প্রচণ্ড পর্যায়ে পৌঁছেছে— তা আপনি দেখতে পাচ্ছেন। আমার অনেক সম্পদ রয়েছে এবং আমার একমাত্র কন্যা ছাড়া আর কেউ উত্তরাধিকার নেই। আমি বললাম, হে আল্লাহর রসুল, অর্ধেক? তিনি বললেন, না! আমি বললাম, হে আল্লাহর রসুল! এক-তৃতীয়াংশ? তিনি বললেন, এক-তৃতীয়াংশ দান করা যেতে পারে, তবে তাও অনেক। তুমি তোমার ওয়ারিসদের দরিদ্র অবস্থায় অন্যের কাছে হাত পাতার মতো অবস্থায় রেখে যাওয়ার চেয়ে সচ্ছল রেখে যাবে, সেটাই উত্তম।— (বুখারি, মুসলিম থেকে মিশকাতে)

হজরত মিকদাম ইবনে মাদীকারির (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন, তুমি নিজে যে খাবার খাও তা তোমার জন্য সদকা, তুমি তোমার সন্তানদের যা খাওয়াও তাও তোমার জন্য সদকা এবং তুমি তোমার খাদেমকে যা খাওয়াও তাও তোমার জন্য সদকা।— (ইমাম বুখারি আদাবুল মুফরাদ গ্রন্থ থেকে) অর্থাৎ কোনো ব্যক্তি যদি হালাল পন্থায় আয়-উপার্জন করে তা নিজের ও সন্তানের জন্য ব্যয় করে, তবে এ জন্য সে আল্লাহর কাছে সওয়াব ও পুরস্কারের অধিকারী হবে।

লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর