শনিবার, ৬ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

ফেনীর ছয় লেন ফ্লাইওভার

সব প্রকল্প সময়মতো বাস্তবায়ন হোক

ফেনীর মহীপালে চালু হয়েছে দেশের প্রথম ছয় লেনবিশিষ্ট ফ্লাইওভার। নির্মাণকাজ সময়মতো সম্পন্ন না করার যে ঐতিহ্য জাতির ঘাড়ে চেপে বসেছে তার বিপরীত রেকর্ড স্থাপিত হয়েছে এ প্রকল্পে। ২০১৫ সালের এপ্রিলে শুরু করা ছয় লেনের ফ্লাইওভার ২০১৮ সালের জুনে শেষ হওয়ার সময়সীমা নির্ধারণ করা হলেও ছয় মাস আগেই তা সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে। দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের লাইফলাইন হিসেবে খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর মহীপালে নবনির্মিত ছয় লেনবিশিষ্ট ফ্লাইওভার নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১৮১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। মূল ফ্লাইওভারটির দৈর্ঘ্য ৬৬০ মিটার। প্রস্থ ২৪.৬২ মিটার। সার্ভিস রোডের দৈর্ঘ্য ১৩৭০ মিটার, প্রস্থ ৭.৫ মিটার। অ্যাপ্রোচ রোডের দৈর্ঘ্য ১১৬০ মিটার। বিশ্বরোড থেকে একটি সড়ক ফ্লাইওভারে যাবে, অন্যটি সাইড দিয়ে এসে লিঙ্ক রোড হিসেবে ফেনী শহর ও ফেনী-নোয়াখালী সড়কে যাবে। এই ফ্লাইওভারের আলাদা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে— এটি ওপরে ছয় লেন ও নিচে চার লেন। সে হিসেবে মহাসড়কের মহীপালের এ অংশটি হবে ১০ লেনের। সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়নের নেতৃত্বে বাস্তবায়িত এ প্রকল্পে সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে মেসার্স আবদুল মোমেন লিমিটেড। নির্ধারিত সময়ের আগে প্রকল্পটির নির্মাণ সম্ভব হয়েছে প্রকল্পের সঙ্গে সেনাবাহিনী সংশ্লিষ্ট থাকায়। দেশের অন্য যেসব ফ্লাইওভারের নির্মাণকাজ সময়মতো সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি, এজন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের বদলে প্রকল্প ব্যয় বাড়িয়ে তাদের লাভবান করা হয়েছে। সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নে দায়িত্বরত সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কারসাজি অনেকাংশে দায়ী এমন অভিযোগ প্রবল। অবৈধ সুবিধা লাভের আশায় তারা প্রকল্প বাস্তবায়নে বিঘ্ন সৃষ্টি করেন এটি একটি ওপেন সিক্রেট। প্রকল্প এলাকার রাজনৈতিক টাউট ও চাঁদাবাজদের তৎপরতাও বিঘ্ন সৃষ্টির জন্য কোনো কোনো ক্ষেত্রে দায়ী। ফেনীর মহীপালের ছয় লেন ফ্লাইওভারের ক্ষেত্রে এসব প্রতিবন্ধক না থাকায় নির্দিষ্ট সময়ের আগে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে। মহীপালের ছয় লেনের ফ্লাইওভার দেশের সড়ক যোগাযোগ উন্নয়নের ক্ষেত্রে মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে। এই ফ্লাইওভার নির্মাণের ফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কপথে যানজট এড়ানো সহজতর হবে। ছয় লেনবিশিষ্ট ফ্লাইওভার নির্দিষ্ট সময়ের আগে বাস্তবায়ন প্রশংসার দাবিদার, অন্যসব প্রকল্প যাতে সময়মতো বাস্তবায়ন হয় সেদিকে সরকার নজর দেবে— এমনটিই কাম্য।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর