মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

মাছ ও মাংসে স্বয়ংসম্পূর্ণতা

জাতির জন্য একটি সুখবর

মাছ ও মাংসে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ এমন সুসংবাদের কথাই জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। রবিবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী বলেছেন, মৎস্য খাত বর্তমানে দেশের মোট জিডিপির ৩ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং কৃষিজ জিডিপির ২৪ দশমিক ৪১ শতাংশের জোগান দিচ্ছে। স্বাধীনতার ৪৬ বছর পর বাংলাদেশ মাছ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। মৎস্য অধিদফতরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৬-১৭ সালে মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪০ লাখ ৫০ হাজার টন। উৎপাদন হয়েছে ৪১ লাখ ৩৪ হাজার টন, যা ২০০৮-০৯ অর্থবছরের চেয়ে ৫৩ শতাংশ বেশি। আর গত অর্থবছরে ৭১ লাখ ৩৫ হাজার টন মাংস উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৭১ লাখ ৫৪ হাজার টন উৎপাদন হয়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ২০১৬ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ জলাশয় থেকে মাছ আহরণে বিশ্বে চতুর্থ এবং মাছ চাষে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় তেলাপিয়া, কই, পাবদা, গুলশা, শিং ও মাগুর মাছের উৎপাদনে সাধিত হয়েছে নীরব বিপ্লব। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কাছে সস্তা ও সহজলভ্য হওয়ায় সিলভার কার্প, পাঙ্গাশ, তেলাপিয়া ও কই এখন প্রাণিজ আমিষের অন্যতম উৎস হয়ে উঠেছে। মাছে-ভাতে বাঙালি ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারে মাছের ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক ঘটনা। একইভাবে আমিষের অন্যতম উপাদান মাংস উৎপাদনেও স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন সুখবর বলে বিবেচিত হওয়ার দাবি রাখে। দেশে ব্যাপকভাবে পোলট্রি ফার্ম প্রতিষ্ঠার কারণে ডিম ও মুরগির মাংস সহজপ্রাপ্য হয়ে উঠেছে। তবে ভোজনরসিকদের কাছে প্রিয় গরুর মাংসের দাম এখন সর্বকালের সবচেয়ে চড়া। ঈদুল আজহায় কোরবানির জন্য লাখ লাখ গরু জবাই দেওয়া হয়। এ উদ্দেশ্যে বিদেশ থেকেও হাজার হাজার গরু আমদানি করা হয়। গরু পালনের সুষ্ঠু পরিবেশ গড়ে তোলা সম্ভব হলে আমদানি খাতে যে শত শত কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে তা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি গরুর মাংসের দাম সহনশীল মাত্রায় আনা সম্ভব হবে। বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে সরকার গরু উৎপাদন বাড়াতে নানামুখী পদক্ষেপ নেবে— এমনটিই কাঙ্ক্ষিত।

 

সর্বশেষ খবর