শুক্রবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি

আরও কঠোর হতে হবে

শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও দুর্নীতি ভুক্তভোগীদের কাছে সমার্থক শব্দ হিসেবেই পরিচিত। সন্দেহ নেই দেশের সব মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরেও দুর্নীতিবাজদের কালো থাবা বিদ্যমান। তবে শিক্ষা-সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোতে এ থাবার প্রভাব বেশি। বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও নিয়ে দুর্নীতি একটি ওপেন সিক্রেট বিষয়। এমপিওর ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত শর্ত পূরণ নয়, উেকাচই যে সিদ্ধান্ত সূচক ভূমিকা পালন করে এটিও সবার জানা। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং অধীনস্থ অধিদফতরগুলোর দুর্নীতি সরকারের জন্যও বিড়ম্বনা ডেকে আনছে। এ নেতিবাচক অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে সরকার কঠোর হওয়ার চেষ্টা করছে। ইতিমধ্যে এমপিও দুর্নীতিতে জড়িত থাকার দায়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ১৭৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে। এ বিষয়ে গত ১৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটি গোপন প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এ প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১২ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদফতরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে তা মন্ত্রণালয়কে জানাতে বলা হয়েছে। গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের নয়টি আঞ্চলিক শিক্ষা কার্যালয়ের পাঁচজন উপ-পরিচালকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া ২০ জন জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবং ১৫০ জন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও কম্পিউটার অপারেটর এবং অফিস সহকারী এই তালিকায় রয়েছেন। স্মর্তব্য, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি সামাল দেওয়া এবং শিক্ষক-কর্মচারীদের হয়রানি বন্ধে ২০১৫ সালে এমপিও বিকেন্দ্রীকরণ করা হয়। এরপর নয়টি আঞ্চলিক শিক্ষা অফিস থেকে এমপিও দেওয়া শুরু হয়। একজন শিক্ষককে এমপিও পেতে কমপক্ষে চার জায়গায় ঘুষ দিতে হয়। স্কুল থেকে ফাইলপত্র তৈরিতে নিম্নমান সহকারীকে প্রথম ঘুষ দিতে হয়। এরপর উপজেলা ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে ঘুষ দিতে হয়। টাকা দিলেই অনলাইন ফাইলে সঠিক মন্তব্য করা হয়, নয়তো নানা অজুহাতে তা বাতিল করা হয়।  আশা করা হচ্ছে, এমপিও দুর্নীতির কুশীলবদের একাংশের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার ঘটনা শিক্ষা মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টদের দুর্নীতির লাগামহীন প্রবণতায় কিছুটা হলেও বাদ সাধবে।  তবে তা দুর্নীতিবাজদের মধ্যে ভয় সৃষ্টি করতে পারবে কিনা তা নির্ভর করছে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কতটা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে তার ওপর।

সর্বশেষ খবর