শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

সমস্যার নাম যানজট

ট্রাফিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিন

যানজট নিঃসন্দেহে রাজধানীর সবচেয়ে বড় সমস্যা। যানজটে প্রতিদিন নগরবাসীর ৩২ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। সব মিলিয়ে রাজধানীর যানজট বছরে ৯৮ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি বা অপচয় ঘটাচ্ছে। সন্দেহ নেই, দুনিয়ার অনেক নগরই যানজটে আক্রান্ত। এই উপমহাদেশের দিল্লি, কলকাতা, করাচি সম্পর্কেও একই কথা প্রযোজ্য। তবে দুনিয়ার কোথাও শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত যেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাগে কিনা তা আমাদের জানা নেই। ঢাকায় ঘণ্টায় বাসের গতি নয় কিলোমিটারেরও নিচে। লন্ডনে এ গতি দ্বিগুণেরও বেশি ১৮ কিলোমিটার। রাজধানীর যানজট নিরসনে একের পর এক উদ্যোগ নেওয়া হলেও পরিস্থিতির ইতিবাচক উন্নতি ঘটছে না। বিশৃঙ্খল ট্রাফিক ব্যবস্থাই রাজধানীর যানজটের জন্য যে প্রধানত দায়ী তাতে সংশয়ের সুযোগ নেই। ফলে ছুটির দিনে যখন যানবাহন চলাচল অর্ধেকে নেমে আসে তখনো যানজটের ভোগান্তি পিছু ছাড়ে না। আমরা এ কলামে বার বার বলেছি, যানজটের লাগাম টানতে হলে ট্রাফিক ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় জোর দিতে হবে। যেখানে-সেখানে পার্কিংয়ের যথেচ্ছতা বন্ধে নিতে হবে উদ্যোগ। ফুটপাথ ও সড়ক দখল করে দোকানপাট খোলা কিংবা জিনিসপত্র রাখার প্রবণতা রুখতে হবে। যেখানে-সেখানে বাসে লোক উঠানোর বদভ্যাস বন্ধে নিতে হবে কড়া ব্যবস্থা। রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির মহোৎসব বন্ধেও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবতে হবে। প্রতিটি সড়কে অযান্ত্রিক যানবাহন চলাচলে আলাদা লেন চালু এবং যেখানে-সেখানে রাস্তা পারাপার বন্ধেরও উদ্যোগ নেওয়া দরকার। প্রাইভেট কারের চাপ কমাতে রাজধানীতে মানসম্মত বাস চালুরও উদ্যোগ নিতে হবে। যানজটের কারণে প্রতিদিন যে বাড়তি জ্বালানি পোড়ে তা জাতীয় অর্থনীতির জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজধানীর যানজট বন্ধ হলে উৎপাদনশীলতায় তা যে অবদান রাখবে, তাতে জাতীয় প্রবৃদ্ধি প্রতি বছরই ৭ শতাংশের বেশি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। মধ্যআয়ের দেশে পরিণত হওয়ার টার্গেট পূরণ সহজতর হয়ে দাঁড়াবে। এ জন্য মেট্রোরেল-পাতালরেল এবং ফ্লাইওভার নির্মাণের প্রাসঙ্গিকতা থাকলেও সবচেয়ে জোর দিতে হবে ট্রাফিক শৃঙ্খলাকে।  এ ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত না হলে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করেও কোনো সুফল যে অর্জিত হবে না—এ সহজ সত্যটি  সবকিছুর আগে অনুধাবন করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর