শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু

দুর্ঘটনা রোধে চাই কঠোর সতর্কতা

ট্রেনের ছাদে উঠে ভ্রমণ করতে গিয়ে প্রতি বছরই প্রাণ হারাচ্ছে বিপুলসংখ্যক মানুষ। এদের একাংশ অসতর্কতাবস্থায় ছাদ থেকে পড়ে প্রাণ হারাচ্ছে। অন্য অংশ বিভিন্ন রেলস্টেশনের ওভার ব্রিজের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে নিচে পড়ে চলে যাচ্ছে না ফেরার দেশে। যারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনের ছাদে চড়ে ভ্রমণ করেন তাদের সবাই যে গরিব মানুষ, তা সহজেই অনুমেয়। ফলে এমন মৃত্যু নিয়ে যেমন হৈচৈ হচ্ছে না, তেমনি এ মৃত্যুযজ্ঞ বন্ধে নেওয়া হচ্ছে না কার্যকর উদ্যোগ। ট্রেনের ছাদের যাত্রীদের জন্য নওগাঁ জেলার রানীনগর রেলস্টেশনের ওভার ব্রিজটি আজরাইলের আস্তানা হিসেবে বিরাজ করছে দীর্ঘদিন ধরে। গত বুধবার ওভারব্রিজের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে ঘটনাস্থলেই চার যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে আরও দুই যাত্রী। যাদের একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। রেল কর্তৃপক্ষ দুর্ঘটনা রোধে ছাদে ওঠা নিষিদ্ধ এবং এ জন্য মাঝে মাঝে জরিমানা করলেও বন্ধ হচ্ছে না ঝুঁকি নিয়ে ভ্রমণের প্রবণতা। রানীনগর রেলস্টেশনের ওভারব্রিজের উচ্চতা রেললাইন থেকে ১৫ ফুট ৩ ইঞ্চি, আর ওই লাইনে যাতায়াতকারী ট্রেনের উচ্চতা রেললাইন থেকে ১৩ ফুট ৬ ইঞ্চি। যার ফলে গত দুই বছরে রানীনগরে রেলস্টেশনের ওভারব্রিজের সঙ্গে ধাক্কা লেগে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে কমপক্ষে ২০ জন নিহত ও অর্ধশতাধিক রেলযাত্রী মারাত্মক আহত হয়েছেন। দুই বছর আগে রেললাইন প্রায় দুই ফুট উঁচুকরণের কাজ সম্পন্ন হয়। কিন্তু ওভারব্রিজগুলো আগের অবস্থায় থাকায় বিশেষ করে রানীনগর রেলওয়ে স্টেশনের ওভারব্রিজটি একটু নিচু হওয়ায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে ট্রেনের ছাদের যাত্রীরা এ দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।

বুধবারের দুর্ঘটনার পর জিআরপি থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। ট্রেনের ছাদে ভ্রমণের সময় প্রতি বছর কী পরিমাণ যাত্রীর প্রাণহানি ঘটছে তার সঠিক তথ্য জানা কঠিন। তারপরও এ সংখ্যা একশর কম নয়। শুধু ভ্রমণ নয়, ছাদে চড়ে দৌড়াদৌড়ির কসরতও করে অনেকে।  এ মৃত্যু খেলাও অনেক সময় দুর্ঘটনার কারণ ঘটায়। এ ধরনের অপমৃত্যু রোধে ট্রেনের ছাদে চড়া শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে ঘোষিত হওয়া উচিত এবং তা বাস্তবায়নে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে কড়াকড়ি ব্যবস্থা নিতে হবে।  পাশাপাশি ঝুঁকিপূর্ণ ওভারব্রিজের উচ্চতা বাড়ানোর দিকেও নজর দিতে হবে।

সর্বশেষ খবর