বুধবার, ৪ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

বিজিএমইএ ভবন

আদালতের হুকুম প্রতিপালিত হোক

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ বিজিএমইএ ভবন ভাঙার জন্য পোশাকশিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠনকে আরও এক বছর সময় দিয়েছে। বিজিএমইএ তাদের ভবনটি ভেঙে ফেলার জন্য আর সময় চাইবে না এমন মুচলেকার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত পোশাকশিল্প মালিকদের আবেদনে সায় দেয়। আদালতের আদেশের পর বিজিএমইএর আইনজীবী সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, আদালতের আদেশ বিজিএমইএ অবশ্যই মানবে। হাতিরঝিল এলাকায় বিজিএমইএর ভবনটি নির্মাণ করা হয় জলাধারের ওপর। জলাধার আইন ভঙ্গ করে অননুমোদিতভাবে ভবনটি নির্মিত হওয়ায় বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ভবনটি ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। বিষয়টি শেষ পর্যন্ত আদালতে যায়। প্রায় আট বছর আইনি লড়াইয়ের পর আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায়ে গত বছরই বিজিএমইএ ভবনের ভাগ্য নির্ধারিত হয়। এবার নিয়ে বিজিএমইএ তাদের ভবন ভাঙার জন্য তিন দফায় মোট ২৫ মাস সময় পেল। আপিল বিভাগের সর্বশেষ আদেশে বলা হয়েছে, ২০ বছর আগে নির্মিত ১৫ তলা ওই ভবন ভেঙে ফেলার জন্য বিজিএমইএ ২০১৯ সালের ১২ এপ্রিল পর্যন্ত সময় পাবে। বেআইনিভাবে নির্মিত বিজিএমইএ ভবনকে সৌন্দর্যমণ্ডিত হাতিরঝিল প্রকল্পে ক্যান্সার বলে অভিহিত করেছিল উচ্চ আদালত। ওই ভবন অবৈধ ঘোষণা করে দেওয়া রায় আপিলেও বহাল থাকে। পরে বিজিএমইএ রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করলেও তা খারিজ হয়ে যায়। রায়ের পর কার্যালয় সরিয়ে নিতে বিজিএমইএ তিন বছর সময় চাইলেও আপিল বিভাগ তাদের ছয় মাসের মধ্যে সে কাজ শেষ করতে বলে। সেই ছয় মাস শেষ হওয়ার আগে আরও এক বছর সময় চেয়ে গত বছর ২৩ আগস্ট আবেদন করে বিজিএমইএ। আপিল বিভাগ তখন ভবনটি ভাঙতে আরও সাত মাস সময় দেয়, যা আগামী ১২ এপ্রিল শেষ হবে। সন্দেহ নেই, তৈরি পোশাকশিল্প দেশের অর্থনীতিতে প্রাণভোমরার ভূমিকা পালন করছে। তবে পোশাকশিল্পের মালিকদের আচরণে এ মর্যাদাবোধের প্রতিফলন ঘটেনি। তারা জলাধারের ওপর যেভাবে বিজিএমইএ ভবন নির্মাণ করেছেন তা কোনোভাবেই কাঙ্ক্ষিত ছিল না। ভবনটি ভেঙে ফেলার নির্দেশ পালনে বার বার সময় চাওয়াও ছিল দুর্ভাগ্যজনক। আমরা আশা করব নিজেদের মর্যাদার কথা মনে করেই আদালতের নির্দেশ প্রতিপালনে বিজিএমইএ আন্তরিক হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর