শনিবার, ২ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

চিকিৎসাশৃঙ্খলা

লাগাম টানার উদ্যোগ প্রশংসনীয়

সরকারি চিকিৎসকদের সিংহভাগ সরকারি হাসপাতালের বদলে বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকে ব্যস্ত থাকেন এটি একটি ওপেন সিক্রেট। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকের চাকরিটি তারা বজায় রাখেন দুটি কারণে। প্রথমত এ চাকরিটির মাহাত্ম্য অনেক; যা ব্যবহার করে প্রাইভেট প্র্যাকটিস কিংবা বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকে দুই হাতে টাকা উপার্জন করা যায়। দ্বিতীয়ত সরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকের ডিউটি মূলত হাজিরার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। সপ্তাহের বিভিন্ন দিন বিভিন্ন চেম্বার বা প্রাইভেট ক্লিনিকে বসেন এমন চিকিৎসকের সংখ্যা কম নয়। কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দিনে একাধিক ক্লিনিকেও বসেন। বার বার বিভিন্ন নিয়মকানুন করলেও কোনোভাবেই চিকিৎসকদের একাধিক জায়গায় রোগী দেখার প্রবণতা বন্ধ করতে পারছে না স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়। তাই এবার একটি নির্দিষ্ট বেসরকারি ক্লিনিক অথবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসকদের নিবন্ধন করার নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতর। অটোমেশন বা অনলাইন নিবন্ধনের আওতায় এনে একাধিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে প্র্যাকটিস করার প্রবণতা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, নার্সিং হোম, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ব্লাড ব্যাংকের অনুমোদন প্রক্রিয়া অটোমেশন করার অনুমোদন দিয়ে ইতিমধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় দেশের যে কোনো জায়গায় এসব প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ওয়েবসাইটে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। প্রতিটি জেলার সিভিল সার্জন সংশ্লিষ্ট জেলা থেকে আবেদন করা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শন করে মতামত পাঠিয়ে দেবেন স্বাস্থ্য অধিদফতরে। সে অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন ও মেয়াদ প্রদান করবে স্বাস্থ্য অধিদফতর। পাশাপাশি ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে তাদের প্রতিষ্ঠানে কর্মরত চিকিৎসকদের তালিকাও স্বাস্থ্য অধিদফতরে জমা দিতে হবে। এসব কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে স্বাস্থ্য অধিদফতর আবেদন করা ক্লিনিক, ব্লাড ব্যাংক ও নার্সিং হোমের অনুমোদন দেবে। এতে একজন চিকিৎসক যে প্রতিষ্ঠানে কাজে আগ্রহী হবেন এবং তার নথিপত্র জমা দেবেন সেখানেই তাকে সেবা দিতে হবে। একাধিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে তারা সেবা দিতে পারবেন না। সরকারি চিকিৎসকদের ঢালাওভাবে একাধিক প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালনে বাদ সাধার উদ্যোগ প্রশংসাজনক। তবে এটি যাতে যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হয় সেদিকেও নজর রাখতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর