রবিবার, ১০ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

জালনোটের দৌরাত্ম্য

অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর হোন

ঈদকে সামনে রেখে তৎপর হয়ে উঠেছে জালনোটের ব্যবসায়ীরা। দেশের অর্থনীতির জন্য হুমকি সৃষ্টিকারী এ চক্রের ১০ সদস্যকে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ কোটি টাকার জালনোটসহ গ্রেফতার করেছে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে দুই থেকে তিন কোটি টাকার জালনোট তৈরির কাগজ ও বিভিন্ন সরঞ্জাম। গ্রেফতার হওয়া ১০ আসামির ৯ জনই জাল টাকা তৈরির অভিযোগে ইতিপূর্বে একাধিকবার গ্রেফতার হয়েছিল। কিন্তু আইনের ফাঁকফোকরে এবং অপরাধী চক্রের অর্থনৈতিক সামর্থ্যের জোরে তারা সহজেই জামিন পেয়ে যায়। আটক অপরাধী চক্রের ১০ সদস্যের কাছ থেকে যে জালনোট উদ্ধার করা হয়েছে তা অনেক বেশি নিখুঁত। সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো জাল টাকায় তারা নিরাপত্তা সুতা স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে। এসব নিরাপত্তা সুতা তারা কীভাবে জোগাড় করেছে ও কোন প্রক্রিয়ায় স্থাপন করেছে সে ব্যাপারে গোয়েন্দারা জিজ্ঞাসাবাদ করছে। সারা দুনিয়াতেই জালনোটের দৌরাত্ম্য রয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাজ্যের মতো উন্নত দেশগুলোও এ আপদ থেকে মুক্ত নয়। আমাদের ওই ভূখণ্ডে জালনোটের দৌরাত্ম্য চলে আসছে ভারত বিভাগের পর থেকে। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর জালনোট তৈরির বিষয়টি নতুন মাত্রা পায়। অভিযোগ রয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করতে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার কালো হাত এ ব্যাপারে ভূমিকা রেখেছে। জালনোটের সঙ্গে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জঙ্গিবাদের সংশ্লিষ্টতা গড়ে উঠেছে বলে ব্যাপকভাবে সন্দেহ করা হয়। জালনোট তৈরির সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক তারা নিশ্চিতভাবে দেশের শত্রুর ভূমিকায় অবতীর্ণ। এ ধরনের অপরাধী দমনে সরকারকে কঠোর হতে হবে। জালনোট তৈরির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা যাতে জামিন না পায় তাও নিশ্চিত করা দরকার। জালনোট সংক্রান্ত অপরাধের তদন্তে পুলিশের একাংশের বিভীষণ মার্কা ভূমিকারও অবসান ঘটাতে হবে। আমরা আশা করব আটক ১০ অপরাধীকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে এ জঘন্য অপরাধের সঙ্গে আর কারা জড়িত তা জানার চেষ্টা করা হবে। তাদের সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিত করতেও আইনশৃঙ্খলা কর্তৃপক্ষ তাদের সাধ্যের সবটুকু চেষ্টা চালাবে আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর