রবিবার, ৮ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

বিদেশে নারী কর্মী প্রেরণ হোক মর্যাদাপূর্ণ

হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ

বিদেশে নারী কর্মী প্রেরণ হোক মর্যাদাপূর্ণ

বন্ধুপ্রতিম দেশ সৌদি আরব থেকে নারী কর্মীরা বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হয়ে দেশে ফেরত আসছেন— ঈদের আগে এমন খবরে অনেকটাই উত্তাল ছিল অভিবাসন খাত। এক ধরনের আতঙ্কও যেন ছড়িয়ে পড়েছিল। তর্ক-বিতর্কের পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যে নারী কর্মী প্রেরণ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে ঝড় উঠেছিল সর্বত্র। গভীর অনুসন্ধান আর বাস্তবতা বিশ্লেষণের আগেই অনেকে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যে নারী শ্রমিক প্রেরণ নিয়ে নানা প্রশ্ন তোলা শুরু করেন। কর্মক্ষেত্রে পুরুষ হোক আর নারী হোক যে কারও ওপর নির্যাতনের খবর অবশ্যই উদ্বেগের বিষয়। ঈদের আগে সৌদি আরব থেকে ফিরে আসা নারী শ্রমিকরা গণমাধ্যমে যে অভিযোগগুলো করেন তার সারসংক্ষেপ হলো— কর্মক্ষেত্রে তারা সুরক্ষা পাননি। মারধরের শিকার হয়েছেন। গৃহকর্তা বা নিয়োগকারী কর্তৃক যৌন হয়রানিসহ বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের শিকার হওয়ার কথাও বলেছেন কেউ কেউ। এ ছাড়া চুক্তি বা শর্ত মোতাবেক নির্দিষ্ট কাজ ও বেতন না দেওয়া, খাবার-দাবার না দেওয়া, বন্দী করে রাখা এসব অভিযোগও ছিল সবার মুখে। কেউ কেউ বলেন, সৌদিতে নিয়ে যাওয়ার আগে যেসব প্রতিশ্রুতির কথা বলা হয়েছিল তার কিছুই তারা পাননি। আর তাই নিপীড়ন-নির্যাতন, বঞ্চনায় অতিষ্ঠ হয়েই সেইফ হোমে আশ্রয় নেওয়া এসব নারী কর্মী দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হন বলে দাবি করেন। অবশ্য এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নারী কর্মী প্রেরণকারী রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো বলছে স্বেচ্ছায় ফিরে আসা নারী কর্মীরা যেভাবে নিপীড়ন-নির্যাতনের কথা উল্লেখ করেছেন বাস্তবে পরিস্থিতি ঠিক সেরকম নয়। দু-একটি বিচ্ছিন্ন-বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া অধিকাংশই নিজের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সমস্যায় দেশে ফিরে এসে নির্যাতনের গল্প বানাচ্ছেন। গণমাধ্যমে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিচ্ছেন।

বর্তমান সময়ে সৌদি আরবে বাংলাদেশের মেয়েদের কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করার সুবিধা জিরো মাইগ্রেশন খরচে। অর্থাৎ একজন মেয়ে বা নারী সৌদি আরবে যাচ্ছেন কোনো ধরনের খরচ ছাড়াই। দুই দেশের চুক্তি বা শর্ত মোতাবেক নিয়োগকর্তা নিজে অভিবাসী নারীর সব ব্যয়ভার বহন করেই সে দেশে নিয়ে যাচ্ছেন। স্মর্তব্য যে, সৌদি আরবে বেশ কয়েক বছর ধরেই নারী শ্রমিক নেওয়া বন্ধ ছিল। তবে ২০১৫ সালে সৌদি আরব নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে নারীদের সৌদি শ্রমবাজারের প্রবেশের দ্বার উন্মুক্ত হয়। দেখা যায়, ২০১৫ সালে বিভিন্ন দেশে যে মোট ১ লাখ ৩ হাজার ৭১৮ জন নারী কর্মী গমন করেন এর মধ্যে শুধু সৌদি আরবেই ২০ হাজার ৯৫১ জন যান। ২০১৬ সালে সৌদি আরবে নারী কর্মী গমনের সংখ্যা তিন গুণ বেড়ে যায়। এ বছর মোট ১ লাখ ১৮ হাজার ৮৮ জন নারী কর্মী বিভিন্ন দেশে গমন করেন। এর মধ্যে শুধু সৌদি আরবে যান ৬৮ হাজার ২৮৬ জন। ২০১৭ সালে নারী কর্মী গমনের সংখ্যা আরও বেড়ে যায়। মোট ১ লাখ ১৮ হাজার ৮৮ জন নারী কর্মীর মধ্যে শুধু সৌদি আরবেই যান ৮৩ হাজার ৩৫৪ জন। এদিকে চলতি বছরের মে পর্যন্ত ৫১ হাজার ৭২৬ জন নারী বিভিন্ন দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ লাভ করেন। বিএমইটির দেওয়া তথ্যমতে, বর্তমানে মোট ৭ লাখ ৪৭ হাজার ৭২৬ জন নারী বিভিন্ন দেশে কাজ করছেন। ফলে দেখা যাচ্ছে, লাখ লাখ নারী কর্মী আজ বিভিন্ন দেশে শ্রম অভিবাসী হয়ে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিরাট অবদান রাখছেন।

সৌদি আরব থেকে ফেরত আসা অনেক নারী শ্রমিক তাদের বিপদাপন্নতার কথা বলেছেন। গণমাধ্যমে প্রচারিত অনেকের কথায় মনে হয়েছে সে দেশে নিপীড়ন-নির্যাতনের বাইরে বোধহয় আর কিছু নেই। ফলে ভালো দিকগুলো আড়ালেই থেকে গেছে। এটা তো সত্য, হাজার হাজার অভিবাসী নারী আছেন যারা সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশের মাটিতে কাজ করে নিজের পরিবারকে দারিদ্র্যাবস্থা থেকে মুক্ত করে সুন্দর অর্থনৈতিক ভিত তৈরি করতে সমর্থ হয়েছেন। নিজের আয়কৃত টাকা দিয়ে নতুন ঘরবাড়ি তৈরি করেছেন। ভবিষ্যতের জন্য ব্যাংকে সঞ্চয় রেখেছেন। ছেলেমেয়েদের ভালো করে লেখাপড়া শিখিয়ে সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধিতে সক্ষম হয়েছেন। এ বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত একটি রিপোর্ট থেকে জানা যায়, জর্ডানে যাওয়া এক নারী যিনি বিউটি পারলারে কাজ করেন, নির্ধারিত বেতন আর ওভারডিউটি মিলিয়ে সেই নারী প্রতি মাসে গড়ে ৩০ হাজার টাকার বেশি আয় করেন। তিনি নিজেই বলেছেন অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল হওয়ার কারণে তিনি সব দিক দিয়েই এগিয়ে যাচ্ছেন। এ রকম হাজারটা উদাহরণ রয়েছে।

আমরা অনেকদিন ধরেই খেয়াল করছি সৌদি আরব, জর্ডান বা লেবানন থেকে ফিরে আসা নারী অভিবাসীদের অভিযোগগুলো প্রায় একই রকম, একই ধরনের। যে অভিযোগগুলোকে ধরেই সমালোচনার তীর ছোড়া হচ্ছে। আমরা এও দেখছি অনেক নারী ভাইবারে, হোয়াটসঅ্যাপে, ইমোতে নানা ধরনের নির্যাতনের কথা ভিডিও করে বিভিন্ন গণমাধ্যম, মানবাধিকার কর্মী বা অভিবাসন নিয়ে যেসব এনজিও কাজ করছে তাদের কাছে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু এই নারী কর্মীরা শত অনুরোধ সত্ত্বেও স্থানীয় নিয়োগকর্তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ বা মামলা দায়ের করার আগ্রহ দেখান না। যদিও বলা হয়, গ্রামের এই নিরীহ সহজ-সরল মেয়েরা সৌদি আরবের মতো ভিনদেশে গিয়ে কীভাবে সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে অভিযোগ প্রদান করবেন তা বুঝতে পারেন না। কিন্তু নারী কর্মী প্রেরণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে যেখানে সংশ্লিষ্ট দূতাবাস এসব অভিযোগ প্রদানে সার্বিক সহযোগিতা করতে চায় সেখানে কেন এসব অভিযোগকারীরা নির্যাতনকারীর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করতে চান না। রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো বলছে, কথিত নির্যাতনের কথা বলে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সমস্যায় দেশে ফিরে আসার চাপ তৈরি করছেন তারা। দু-চারটি ঘটনা দিয়ে পুরো বিষয়টিকে বিচার করা ঠিক নয়। এমনও দেখা গেছে, দেশে ফেরত আসার জন্য অনেক নারীই নিপীড়ন-নির্যাতনের কথা বলে এক ধরনের বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি করেন। যেহেতু তারা পাসপোর্ট, টিকিট ও মেডিকেল বাবদ কোনো অর্থ খরচ না করে মধ্যপ্রাচ্যে গিয়েছেন সেহেতু পারিবারিক সমস্যায় দেশে ফিরে আসার ইচ্ছা হলেই অতিমাত্রায় কষ্ট নির্যাতনের কথা বলে এক ধরনের পরিস্থিতি তৈরি করেন। এ পর্যন্ত যেসব নারী কর্মী মধ্যপ্রাচ্য থেকে ফিরে এসেছেন তার বেশির ভাগ একই ধরনের অসুবিধার কথা বললেও মধ্যপ্রাচ্যের স্থানীয় প্রশাসনের কাছে কোনো সাহায্যের জন্য যাননি। এ ছাড়া খাবারের সমস্যা, পারিবারিক সমস্যা, দেশে চলে আসার প্রবণতা, হোম সিকনেস, আত্মীয়স্বজন-সন্তানদের জন্য মন খারাপ হওয়া— এসব কারণেও অনেকে দেশে ফিরে আসার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন।

তবে এও ঠিক, নারী কর্মী প্রেরণের ক্ষেত্রে আমাদের অনেক বিষয়ে এখনই সতর্কতা অবলম্বন করার সময় এসেছে। একই সঙ্গে কর্মী প্রেরণ নীতিমালায় কিছু বিষয় যোগ করার প্রয়োজনীয়তাও দেখা দিয়েছে। প্রথমত, পাসপোর্টে একজন নারী কর্মীর বয়সসহ যেসব তথ্যাদি দেওয়া হয় বিএমইটির পক্ষ থেকে সেই তথ্যের সত্যতা শতভাগ নিশ্চিত হতে হবে। বিদেশে যাওয়ার আগে তড়িঘড়ি না করে বিদেশ গমনেচ্ছুর পাশাপাশি তার পিতা-মাতা, স্বামী বা অভিভাবকদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করার অপশন থাকতে হবে। নিয়োগকর্তার তথ্যাদি বিএমইটির কাছে থাকতে হবে। এখন থেকেই এ ধরনের একটি ডাটাবেজ তৈরি করতে হবে, যাতে দূতাবাস বুঝতে পারে বাংলাদেশের কোন নারী কোথায় কোন ধরনের কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন। এ ছাড়া সৌদি আরবে বা মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশে নারী কর্মীদের প্রেরণের আগে অবশ্যই কিছু কিছু বিষয়ে আরও কঠোর হতে হবে। সে ক্ষেত্রে সঠিক প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষতা অর্জন ছাড়া কোনো নারী কর্মীকেই বিদেশে পাঠানো যাবে না। প্রশিক্ষণ না নিয়ে ভুয়া সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে কেউ যাতে বিদেশ যেতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। অভিযোগ রয়েছে, দেশে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে দালালের মাধ্যমে উেকাচ প্রদান করে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আঁতাতের মাধ্যমে ভুয়া সার্টিফিকেট গ্রহণ করছেন বিদেশগামী অনেক নারী কর্মী। আর এসব ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করে একশ্রেণির দালাল। এসবের পাশাপাশি বিদেশ যাওয়ার প্রাক্কালে একজন নারী কর্মীকে দক্ষ করে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের মেয়াদ বাড়াতে হবে। প্রশিক্ষণ শেষে অকৃতকার্যদের দেশের বাইরে কাজ করতে পাঠানো যাবে না এ তদারকিটা বিএমইটিকে শক্তপোক্তভাবে করতে হবে।

এটি সত্য যে, সৌদি আরবসহ কয়েকটি দেশে আগের তুলনায় নারী কর্মী গমন বৃদ্ধি পেলেও তাদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি এবং সুরক্ষার বিষয়ে কার্যকর কৌশল ও পরিকল্পনা গ্রহণ করতে না পারাটাও আমাদের কূটনীতির বড় সীমাবদ্ধতা। তবে আশার সংবাদ এই যে, প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নারী কর্মীদের নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বেশকিছু উদ্যোগের কথা বলেছে বিএমইটি। সরকারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এ প্রতিষ্ঠানটি বলছে, যেসব নারী কর্মী সৌদি আরবে যাবেন প্রথমে তাদের জানতে হবে, দুই বছরের চুক্তি অনুযায়ী তারা সৌদি আরব যাচ্ছেন। এর মধ্যবর্তী সময়ে দেশে আসার সুযোগ নেই। বিএমইটি আরও বলেছে, অভিবাসী নারীদের সেবা প্রদানের লক্ষ্যে সৌদি আরবে ১০টি সেবাকেন্দ্র স্থাপন করা হবে। এ ছাড়া কোনো নারী দেশে ফিরে আসতে চাইলে দূতাবাসের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত প্রদান করা হবে।

বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে অভিবাসী নারীদের যে কোনো ধরনের সংকটাপন্নতা খুবই স্পর্শকাতর এক বিষয়। এ বিষয়টি নিয়ে হেলাফেলা বা অবহেলার সুযোগ নেই। দেশের সার্বিক অবস্থায় কর্মসংস্থানের চাহিদার বিবেচনায় প্রথমেই ভাবতে হবে আমাদের কোনো অবিবেচনাপ্রসূত কর্মকাণ্ডের কারণে যাতে মধ্যপ্রাচ্যসহ সৌদি আরবের মতো গুরুত্বপূর্ণ দেশে আমাদের নারী কর্মী প্রেরণের খাত স্থগিত না হয়ে যায়। যেন নারী অভিবাসীদের রুটি-রুজির পথ বন্ধ না হয়। আমাদের মনে রাখতে হবে বিশ্ব শ্রমবাজারে নানারকম জটিলতা এখন দৃশ্যমান। মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার এখনো আমাদের জন্য মসৃণ হয়নি। বাংলাদেশের আনডকুমেন্টেড যেসব কর্মী এখন মালয়েশিয়া রয়েছেন তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে সে দেশের সরকার। সৌদি আরব, কাতারে অবস্থানরত বাংলাদেশি পুরুষ কর্মীদের অবস্থাও খুব ভালো যাচ্ছে না। কুয়েত, দুবাইয়ের শ্রমবাজার এখনো উন্মুক্ত হয়নি। ইরাকের শ্রমবাজারও সেভাবে খোলেনি। এসব বাস্তব বিষয় মাথায় নিয়ে আমাদের এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি করা ঠিক হবে না, যাতে আমাদের শ্রমবাজারের বড় ধরনের ক্ষতি হয়।

অভিবাসন একটি চলমান প্রক্রিয়া। বর্তমান সময়ে অভিবাসন প্রক্রিয়া বহুমাত্রিকতায় পৌঁছেছে। কিন্তু সুষ্ঠু নিরাপদ অভিবাসন ব্যবস্থাপনায় আমরা কেন জানি এখনো পিছিয়ে। নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ অভিবাসন নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি বলেই অভিবাসন খাতে ঝড়ঝাপটা আসে। আমার মনে হয়, আমাদের দৃঢ় কূটনৈতিক তৎপরতা ও নারী কর্মী প্রেরণের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা তৈরি করা না হলে উদ্বেগ আর সংশয় থাকবেই। আমি বিশ্বাস করি, নারী কর্মী প্রেরণে এখনই একটি জুতসই নীতিমালা তৈরি করা প্রয়োজন। শুধু বেশি রেমিট্যান্স আসছে বলে হাততালি দিলে চলবে না। বিপরীতে নারী কর্মীসহ সব কর্মীর নিরাপত্তা, নিয়োগকারীর জবাবদিহিতা— এগুলো অনেক বেশি প্রয়োজন। শুধু সরকার নয়, রিক্রুটিং এজেন্সিসহ যেসব এনজিও নিরাপদ অভিবাসন নিয়ে কাজ করছে তাদের সবাইকে একযোগে এসব বিষয়ে কাজ করতে হবে। বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে কর্মরত লেবার অ্যাটাশেদের নারী কর্মীদের মর্যাদাপূর্ণ অভিবাসনে আরও দৃঢ় ও সৃজনশীল হতে হবে। বর্তমানে সৌদি আরবে মুসানাদ (কম্পিউটারাইজড) পদ্ধতিতে নারী শ্রমিক পাঠানোর পরিবর্তে দূতাবাসের মাধ্যমে পাঠানোর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে; যাতে নিয়োগকর্তার বিস্তারিত তথ্যাদি দূতাবাসে জমা থাকে। ফলে কোনো অঘটন ঘটলে দ্রুত প্রতিকার নেওয়া সম্ভব হবে।

আসুন, সব উদ্বেগ ও সংশয় মোকাবিলা করে অভিবাসন খাতে আরও আস্থা, বিশ্বাস, নিরাপত্তা তৈরিতে ঐক্যবদ্ধ হই। নারীর আরও মর্যাদাপূর্ণ অভিবাসনে আমরা সতর্ক ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করি। কোনো ধরনের অপপ্রচার যাতে আমাদের নারী অভিবাসনসহ অভিবাসন খাতে বাধা তৈরি করতে না পারে সে বিষয়ে সবাই সজাগ দৃষ্টি রাখি। সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এ খাতকে আরও বেশি এগিয়ে নেওয়াটাই এখন সময়ের দাবি।

লেখক : শ্রম-অভিবাসন বিশ্লেষক।

ই-মেইল : [email protected]

সর্বশেষ খবর