বৃহস্পতিবার, ১২ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

সরকারি খাতে দুর্নীতি

বিশ্বব্যাংকের মূল্যায়ন লজ্জাজনক

বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ মূল্যায়নে সামাজিক খাতে এগিয়ে থাকলেও স্বচ্ছতা, দক্ষতা ও সরকারি খাতের দুর্নীতিতে বাংলাদেশের পিছিয়ে পড়ার তথ্য জাতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক। দুর্নীতি প্রতিরোধে সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার যে অভাব নেই তা সাদা চোখেও যে কেউ অনুভব করবেন। কিন্তু এসব দেখভাল করার দায়িত্বে যারা তারা নিজেরা কতটা দুর্নীতিমুক্ত তা নিয়ে সংশয় থাকায় সকলি গরলি ভেল অবস্থার উদ্ভব ঘটছে। বিশ্বব্যাংকের মূল্যায়ন অনুযায়ী স্বচ্ছতা, দক্ষতা এবং সরকারি খাতে দুর্নীতির বিষয়ে উন্নয়ন সহায়তাপ্রাপ্ত নিম্ন আয়ের বা আইডিএ দেশগুলোর সূচক যেখানে ৬-এর মধ্যে ৩, সেখানে নিম্নমধ্যম আয়ে উন্নীত হওয়ার পরও বাংলাদেশের সূচক ২ দশমিক ৭। জনপ্রশাসনের দক্ষতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সূচক মাত্র ২ দশমিক ৫, অন্য আইডিএ দেশগুলোর সূচক এখানে ২ দশমিক ৯। এ ছাড়া আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতার সূচকে আইডিএ দেশগুলোর রেটিং ২ দশমিক ৮ হলেও বাংলাদেশের রেটিং ২ দশমিক ৫। মেধাস্বত্ব ও সুশাসনের ক্ষেত্রেও পিছিয়ে বাংলাদেশ। এ খাতে আইডিএ দেশগুলোর সূচক ২ দশমিক ৯ হলেও নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার পরও বাংলাদেশের সূচক ২ দশমিক ৫। রাজস্ব আদায়ে সক্ষমতার ক্ষেত্রে অন্য দেশগুলোর সূচক যেখানে ৩ দশমিক ৪ সেখানে বাংলাদেশের অর্জন ৩। বাণিজ্যনীতির ক্ষেত্রে নিম্ন আয়ের দেশগুলোর সূচক ৩ দশমিক ৮ হলেও বাংলাদেশের ৩ দশমিক ৫। দেশের আর্থিক খাতের এই রেটিংয়ে খোদ অর্থমন্ত্রীও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তিনি বিশ্বব্যাংকের পাঠানো মূল্যায়নে নোট লিখে মন্তব্য করেন, ‘ইজ রিয়েলি দ্য পারফরম্যান্স ইন ফিন্যানশিয়াল সেক্টর সো ব্যাড?’ দেশের সরকারি দফতরগুলোর কাজকর্মে স্বচ্ছতা আনা ও গতি বাড়াতে বর্তমান সরকারের আমলে সরকারি কর্মচারীদের বেতন দ্বিগুণের বেশি বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু তাতে জনগণের ট্যাক্সের টাকার অপচয় ছাড়া প্রকৃত কোনো অর্জন নেই বললেই চলে। বেতন ও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর পরও সরকারি দফতরে দুর্নীতি কমেনি। সন্দেহ নেই, বিশ্বব্যাংকের মূল্যায়নকে ঐশী নির্দেশনার মতো নির্ভুল ভাবছে না কেউ। দরিদ্র কিংবা উন্নয়নশীল দেশগুলোকে তাচ্ছিল্য করতে তাদের ভুলত্রুটিকে বড় করে দেখানো হয়— এমন অভিযোগও রয়েছে। তার পরও বিশ্বব্যাংকের মূল্যায়নকে অবহেলা না করে নিজেদের ভুলত্রুটি শোধরানোর ক্ষেত্রে নজর দেওয়াই হবে উত্তম কাজ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর