শনিবার, ১১ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

গবাদি পশু পালনে সুখবর

কোরবানি ও আমিষ চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখুক

গবাদি পশুর ক্ষেত্রে দেশ এখন অনেকটাই স্বয়ংসম্পূর্ণ। বলা যায়, গত তিন বছরে দেশে এ ক্ষেত্রে এক নীরব বিপ্লবের সূচনা হয়েছে। প্রতি বছর ১ কোটির বেশি পশু কোরবানি দেওয়া হয় ঈদুল আজহায়। এর এক-তৃতীয়াংশের বেশি গরু; যার এক-তৃতীয়াংশের বেশি অনানুষ্ঠানিকভাবে আমদানি করা হতো ভারত থেকে। দেশে সারা বছর আমিষের চাহিদা পূরণে যে গরু জবাই হতো তারও প্রায় অর্ধেক আসত ভারত থেকে অনানুষ্ঠানিক আমদানির মাধ্যমে। ভারত সরকার গরু রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পর কোরবানির চাহিদা পূরণে পর্যাপ্ত গরু পাওয়া যাবে কিনা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। গরু আমদানিতে সৃষ্ট বাধায় দেশে গবাদি পশুর দাম রাতারাতি প্রায় দ্বিগুণ পর্যায়ে উন্নীত হয়। এ নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া প্রকারান্তরে দেশের জন্য অভিশাপের বদলে আশীর্বাদ হয়েও দেখা দেয়। একদিকে গরুসহ সব ধরনের গবাদি পশুর মূল্যবৃদ্ধি, অন্যদিকে স্বল্প সুদে গবাদি পশু পালনের ঋণসুবিধা হাজার হাজার সাধারণ মানুষকে গরু, ছাগল, ভেড়া পালনে উৎসাহী করে তোলে। বিপুলসংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি হয় এর মাধ্যমে। এর প্রতিক্রিয়ায় গত তিন বছরে দেশে গবাদি পশুর সংখ্যা বেড়েছে। এ মুহূর্তে সারা দেশে কোরবানিযোগ্য গরু রয়েছে আনুমানিক ৫০ লাখের কাছাকাছি। ছাগল-ভেড়ার সংখ্যা অন্তত ৮০ লাখ। ফলে আসন্ন ঈদুল আজহায় কোরবানিযোগ্য পশুর সংকট হবে না— এমনটিই আশা করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি মিয়ানমার থেকে গরু আমদানির ঘটনা এ খাতে ইতিবাচক প্রভাব রাখবে। ভারত থেকে গরু আসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কোরবানিসহ দৈনন্দিন আমিষ চাহিদা পূরণে সংকট দেখা দেবে বলে যে আশঙ্কার সৃষ্টি হয়েছিল তা মিথ্যা বলে প্রমাণিত করেছে দেশের পরিশ্রমী মানুষ। তবে এ সাফল্যে আত্মপ্রসাদের কোনো সুযোগ নেই। স্বীকার করতেই হবে, গরু আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমিষের চাহিদা পূরণে এখনো সমস্যা রয়েই গেছে। গরুর মাংসের বাজারে অগ্নিমূল্যের তাপ সমানে অব্যাহত। এ সমস্যা মেটাতে গবাদি পশু পালনে আরও বেশি উদ্যোগী হতে হবে। গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবে দ্রুত ফলনশীল উন্নতমানের ঘাস উৎপাদনের উদ্যোগও নেওয়া দরকার। কোরবানি কিংবা দৈনন্দিন আমিষের চাহিদা পূরণই শুধু নয়, বিদেশে মাংস রপ্তানির লক্ষ্য নিয়ে গবাদি পশু পালনের উদ্যোগে উৎসাহ জোগাতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর