শনিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

দালাল রাজ্যের অভিধা

বিআরটিএতে লাগাম পরাতে হবে

দেশের সরকারি অফিস ও দুর্নীতি দুটি যেন একসূত্রে গাঁথা। এদিক থেকে শিরোপার অন্যতম দাবিদার বিআরটিএ অফিস। বলা যেতে পারে দেশের সড়ক ব্যবস্থাপনায় যে নৈরাজ্য চলছে, সেজন্য অনেকাংশে দায়ী এ প্রতিষ্ঠানটি। বলা হয় বিআরটিএ এমন এক প্রতিষ্ঠান যার পিয়ন থেকে শীর্ষ কর্মকর্তা সবাই আলাদিনের আশ্চর্য চেরাগের অধিকারী। এ প্রতিষ্ঠানের প্রায় সব পিয়নও নাকি কোটিপতি। কর্মকর্তাদের অবস্থা কী তা সহজেই অনুমেয়। উেকাচ ছাড়া বিআরটিএতে কোনো কাজ হয় না এমন কথা বলা সত্যের অপলাপ হবে। কারণ অতিক্ষমতাধর যারা তাদের কাছ থেকে উেকাচ আদায় যে ঝুঁকিপূর্ণ তা এ অফিসের কর্তা ও সাধারণ কর্মচারীদেরও অজানা নয়। তবে সে সংখ্যা শতকরা ১ শতাংশেরও কম। বাকি ৯৯ ভাগেরও বেশি সেবাগ্রহীতাকে বড় অঙ্কের উেকাচ দিয়েই কাজ আদায় করতে হয়। এ ক্ষেত্রে সরাসরি উেকাচ নেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় মধ্যস্থতা করে দালাল নামের পরজীবীরা। ফলে বিআরটিএ পরিণত হয়েছে দালাল রাজ্যে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিআরটিএ ঘিরে দালালদের রমরমা বাণিজ্য দিন দিন সম্প্রসারিত হচ্ছে। নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও মন্ত্রিসভায় সড়ক পরিবহন আইনের খসড়া অনুমোদন হওয়ায় গাড়ির নিবন্ধন, রুট পারমিট, নতুন ড্রাইভিং লাইসেন্স ও নবায়নের সংখ্যা শতগুণ বেড়ে গেছে। বিআরটিএ অফিসের সামনের সড়কে ফিটনেস সার্টিফিকেটের জন্য যানবাহনের দীর্ঘ লাইন পড়ছে প্রতিদিনই। যানবাহনসংক্রান্ত বাড়তি কাজের চাপ সামাল দিতে বহিরাগত শতাধিক দালালের আওতায় অতিসম্প্রতি আরও প্রায় আড়াই শ সহকারী দালাল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কার্যালয়টির নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আনসার সদস্যরাও হাত গুটিয়ে বসে নেই। বিআরটিএর দালালি তৎপরতা নির্বিঘ্ন রাখাসহ নিজস্ব নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় তারাও মাসিক বেতনে অর্ধশতাধিক কর্মচারী নিয়োগ করেছেন। ঘুষ-দুর্নীতির অভয়ারণ্য বিআরটিএতে সততা ফিরে আসবে— এমন ভাবনা দুরাশার নামান্তর! তবে সড়ক নৈরাজ্যে লাগাম পরাতে বিআরটিএতে যে যাচ্ছেতাই অবস্থা চলছে, তা নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ নিতে হবে। সময় থাকতে এ সংস্থাটিতে লাগাম পরানো জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর