বুধবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

নতুন শ্রম আইন

শ্রমিক অধিকার নিশ্চিতকরণে সফল হবে

কলকারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন করার প্রক্রিয়া সহজতর করে শ্রম আইন সংশোধন করা হয়েছে। মন্ত্রিসভায় ইতিমধ্যে শ্রম আইনের এ-সংক্রান্ত সংশোধনীর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। গত সোমবার মন্ত্রিসভায় উত্থাপিত বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) আইন, ২০১৮-এর খসড়ায় ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে সংশিস্ন্লষ্ট কারখানার শ্রমিক সদস্যদের সমর্থনের হার ৩০ থেকে কমিয়ে ২০ ভাগ করা হয়েছে। এর ফলে কোনো কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন করা সহজতর হবে। সংশোধিত আইন অনুযায়ী ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধনের আবেদন পাওয়ার ৫৫ দিনের মধ্যে সরকারকে নিবন্ধন দিতে হবে। আবেদন প্রত্যাখ্যাত হলে ৩০ দিনের মধ্যে শ্রম আদালতে আপিল করা যাবে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) চাহিদা অনুযায়ী শ্রমবান্ধব নীতি প্রণয়নে এ সংশোধনী আনা হয়েছে। সংশোধিত আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের উৎসবভাতা দেওয়া হবে। নারী শ্রমিক প্রসূতিকল্যাণ সুবিধাসহ প্রসবের পর আট সপ্তাহ পর্যন্ত অনুপস্থিত থাকতে পারবেন। কোনো মালিক প্রসূতিকল্যাণ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করলে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদ-ে দ-িত হবেন। কোনো কারখানায় ২৫ জনের বেশি শ্রমিক থাকলে তাদের জন্য পানির ব্যবস্থাসহ খাবার কক্ষ রাখতে হবে, সেখানে বিশ্রামেরও ব্যবস্থা থাকতে হবে। শ্রমিকরা ইচ্ছা করলে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে কাজ করে পরে তা উৎসব ছুটির সঙ্গে ভোগ করতে পারবেন। সংশোধিত আইনে ১৪ বছরের নিচে শ্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। দেশের কারখানাগুলোয় আগে ১২ বছর বয়সী শিশুরা হালকা কাজ করতে পারত, এখন ১৪ বছরের নিচের কাউকে দিয়ে কারখানায় কাজ করানো যাবে না। নতুন শ্রমিক আইনটি পাস হলে খাবার ও বিশ্রামের সময় বাদে কোনো শ্রমিককে ১০ ঘণ্টার বেশি কাজ করানো যাবে না। নতুন আইনে কলকারখানায় শৃঙ্খলা বজায় রাখার ওপরও গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এর ফলে বলপ্রয়োগ, হুমকি প্রদর্শন অথবা কোনো স্থানে আটক রেখে বা শারীরিকভাবে আঘাত করে কিংবা গ্যাস-বিদ্যুৎ বন্ধ রেখে কোনো কিছু মেনে নিতে বাধ্য করলে তা অসদাচরণ বলে বিবেচিত হবে। নতুন আইনে শ্রম আদালতে মামলা দায়েরের তিন মাসের মধ্যে রায় দেওয়া এবং কোনো কারণে ব্যর্থ হলে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে রায় দেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। শ্রম আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনীটি শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করার পাশাপাশি কলকারখানায় শান্তি বজায় রাখতে অবদান রাখবে বলে আশা করা যায়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর