সোমবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

পাহাড়ে রক্তপাত

সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোকে সামাল দিন

পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর অন্তর্দ্বন্দ্ব কিছুতেই থামছে না। চাঁদাবাজি ও প্রভাব বিস্তারের বিরোধে পাহাড়ে প্রায়ই রক্ত ঝরছে। সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিত রাঙামাটির নানিয়ারচর আবারও রক্তাক্ত হয়েছে গত শুক্রবার। এ দিন ভোরে এ উপজেলার রামসুপারিপাড়ায় দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করেছে যুদ্ধমোহন চাকমা ওরফে আকর্ষণ (৪২) ও শ্যামল কান্তি চাকমা ওরফে সুমন্ত নামের দুই ব্যক্তিকে। নিহতরা পাহাড়ি সংগঠন জেএসএসের (সংস্কারপন্থি) কর্মী হিসেবে পরিচিত। শুক্রবার ভোরে ১০-১২ জনের একটি সশস্ত্র দল রামসুপারিপাড়ায় যখন হামলা চালায় যুদ্ধমোহন চাকমা ও শ্যামল কান্তি চাকমা নিজ বাড়িতে ঘুমিয়েছিলেন। দুর্বৃত্তরা বাড়িতে ঢুকে তাদের এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে, এরপর তাদের ওপর গুলি চালানো হয়। ফলে দুজন নিহত হন ঘটনাস্থলেই। এ ঘটনার খবর পেয়েই পুলিশের একটি বিশেষ দল ঘটনাস্থলে গেলেও তাৎক্ষণিকভাবে লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি এমএন লারমাপন্থি জেএসএস ত্যাগ করে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টে (ইউপিডিএফ) যোগ দিয়েছিলেন আকর্ষণ চাকমা ও শ্যামল কান্তি চাকমা। নিহতদের পরিবারের দাবি, এ ঘটনার জের ধরেই হত্যাকা- ঘটানো হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের অশান্ত পরিস্থিতি তিন পার্বত্য জেলা শুধু নয়, সারা দেশের মানুষের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। লক্ষণীয় যে, আইনশৃঙ্খলার এ বিসংবাদের প্রায় প্রতিটি ঘটনার পেছনে পার্বত্য চট্টগ্রামের চার সশস্ত্র পাহাড়ি সংগঠনের কোনো না কোনোটির সংশ্লি­ষ্টতা রয়েছে। প্রতিটি পাহাড়ি রাজনৈতিক সংগঠনের হাতে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র থাকায় পাহাড়ি বাঙালি নির্বিশেষে প্রায় সব মানুষই তাদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। পার্বত্য শান্তিচুক্তির পর আশা করা হয়েছিল পাহাড়ে শান্তি ফিরে আসবে। শান্তিচুক্তির আগে পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা ও বিজিবির ক্যাম্প ছিল সাড়ে পাঁচশর বেশি। চুক্তির পর দুর্গম পার্বত্য এলাকা থেকে ৩৩৪টি ক্যাম্প সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সেনাক্যাম্প প্রত্যাহারকে নিজেদের যথেচ্ছতা প্রকাশের সুযোগ হিসেবে দেখছে পাহাড়ি সশস্ত্র সংগঠনের সদস্যরা। এ হঠকারিতা বন্ধে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর