শুক্রবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

পেট্রলবোমা হামলা

কোনো অসহিষ্ণুতা কাম্য নয়

গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘোষণার পর বুধবার দুপুরে বগুড়ার শাজাহানপুরে যাত্রীবাহী কোচে পেট্রলবোমা হামলার ঘটনাকে অশনি সংকেত হিসেবে দেখা হচ্ছে। স্বস্তির ঘটনা হলো এ হামলার দুজন নারীযাত্রী আহত হলেও তা সামান্য। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে এক যুবদল কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। বগুড়ার ঘটনায় কারা জড়িত তা সঠিক তদন্তে বের হয়ে আসতে পারে। তবে এ ঘটনা শুধু বগুড়া নয়, সারা দেশের জনমনে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে দেশজুড়ে যে একের পর এক পেট্রলবোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে তার পুনরাবির্ভাব ঘটতে যাচ্ছে কিনা সে বিষয়টি জনমনে উঁকি দিচ্ছে। ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন এবং সরকারকে জব্দ করার হাতিয়ার হিসেবে চারদলীয় ঐক্যজোটের একটি শরিক দলের পেট্রলবোমা অপচর্চা সংশ্লিষ্টদের জন্য আত্মঘাতী হয়ে দাঁড়ায়। দেশবাসীর সমর্থনও হারায় তারা। একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এবং গ্রেনেড হামলার রায় ঘোষণার পরপরই বগুড়ায় পেট্রলবোমা নিক্ষেপের যে ঘটনা ঘটেছে তা সংশ্লি­ষ্টদের আবারও ভুল পথে চলার আলামত কিনা এমন প্রশ্ন জোরেশোরে উচ্চারিত হচ্ছে। বিএনপি কিংবা তাদের সহযোগী দলগুলো পেট্রলবোমা হামলার সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছেন। তাদের অভিযোগ জনমনে ভুল ধারণা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে মহল বিশেষ ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এ ধরনের অপকর্মের অবতারণা ঘটিয়েছে। গ্রেনেড হামলার রায়ের প্রতিবাদে তারা যে কর্মসূচি দিয়েছেন তা শান্তিপূর্ণভাবে পালন করা হচ্ছে। পাশাপাশি রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে আপিল করার ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে। বগুড়ার পেট্রলবোমা হামলায় যারাই জড়িত থাকুক তাদের একমাত্র পরিচয় অপরাধী। আমরা আশা করব নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দোষী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে। পাশাপাশি নির্বাচনের প্রাক্কালে দেশের শান্তিশৃঙ্খলা সুরক্ষায় সবপক্ষ যত্নবান হবে। গ্রেনেড হামলা দেশের ইতিহাসের সব চেয়ে বড় অপরাধগুলোর একটি। বিকারগ্রস্ত মানসিকতার অধিকারীরাই এ ধরনের ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে। বিচারিক আদালতের রায়ে সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে অপরাধীদের শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে কোথাও ন্যায়বিচারের ব্যত্যয় হলে উচ্চ আদালতের ওপর ভরসা করাই শ্রেয়। কোনো ক্ষেত্রেই অসহিষ্ণুতা কাম্য নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর