মঙ্গলবার, ১৬ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

শিক্ষার বদলে ব্যবসা

কর্তৃপক্ষের কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙুক

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও অনিয়ম সমার্থক শব্দ হয়ে উঠেছে। দুই হাতে অর্থ উপার্জনে দেশে ব্যাঙের ছাতার মতো একের পর এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে। হাতে গোনা কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ভূমিকা রাখলেও সিংহভাগ বিশ্ববিদ্যালয় সার্টিফিকেট বাণিজ্যকে তাদের প্রধান লক্ষ্য হিসেবে বেছে নিয়েছে। এসব উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর নজরদারি করার জন্য রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। ইউজিসি চেয়ারম্যানও বলেছেন, অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ই সরকারি আইনের তোয়াক্কা করছে না। তারা অনিয়মকেই নিয়ম বলে ধরে নিয়েছে। কোনো বিশ্ববিদ্যালয় অনিয়ম করলেও ইউজিসি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে না। ভারতসহ অন্যান্য দেশের ইউজিসিকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হলেও এ দেশের বিদ্যমান আইনে সে ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। ফলে নিয়ম ভঙ্গকারী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইউজিসিকে সুপারিশ করতে হয় শিক্ষা মন্ত্র্রণালয়ের কাছে। তবে রহস্যজনক কারণে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। বাংলাদেশ প্রতিদিনের অনুসন্ধানে জানা যায়, সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব বরাবর দেওয়া এক পত্রে ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগ জানিয়েছে, আমেরিকা-বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয়ে সার্টিফিকেট বিক্রি হচ্ছে, এ ব্যাপারে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। দেশের বিভিন্ন সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদপত্রের গ্রহণযোগ্যতার ব্যাপারে জানতেও চাওয়া হয়েছে। তথাকথিত আমেরিকা-বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার কোনো সুযোগও নেই। এমন অবস্থা বিরাজ করছে আরও অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে। শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনাকারী ৯২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৩টিতে উপাচার্য নেই। উপ-উপাচার্য রয়েছেন মাত্র ২১টিতে। অর্ধেকের বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে কোষাধ্যক্ষ নেই। দেশে উচ্চশিক্ষা বিস্তারের বদলে সার্টিফিকেটধারী বেকার সৃষ্টির অপপ্রক্রিয়া রোধে শিক্ষা মন্ত্রণালয় তথা সরকার কুম্ভকর্ণের ঘুম থেকে জেগে উঠবে- আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর