রবিবার, ১১ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

সাগর পথে মানব পাচার

পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

অবৈধভাবে ঝুঁকিপূর্ণ পথে নৌকায় সাগর পাড়ি দিচ্ছে হাজার হাজার রোহিঙ্গা। বাংলাদেশ ও মিয়ানমার থেকে তারা অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার চেষ্টা করছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সম্ভাবনা সৃষ্টি হওয়ায় বেড়েছে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার প্রবণতা। বুধবার বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার নৌকায় মালয়েশিয়া যাওয়ার সময় কক্সবাজারের টেকনাফে ৩৩ রোহিঙ্গা ও ৬ বাংলাদেশিকে আটক করা হয়। রোহিঙ্গা নেতাদের বরাত দিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাগর পথে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য গত কয়েকদিনে মিয়ানমারের পশ্চিম রাখাইন রাজ্য থেকে কয়েকটি নৌকা ছেড়ে গেছে। তবে এ পর্যন্ত কতটি নৌকা মিয়ানমার উপকূল ত্যাগ করেছে সে ব্যাপারে সরকারি            কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। সিতওয়ের এক ত্রাণকর্মীর দেওয়া তথ্যে বলা হয়েছে, অক্টোবরের প্রথম থেকে এ পর্যন্ত কয়েকটি নৌকা মালয়েশিয়া পৌঁছেছে। এসব নৌকার কয়েকটিতে নারী ও শিশুরাও ছিল, যারা মালয়েশিয়ায় থাকা স্বজনদের কাছে যাওয়ার জন্য দেশ ছেড়েছে। প্রসঙ্গত, নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত সাগর তুলনামূলকভাবে শান্ত থাকে। আর এই সময়টাতেই সংঘবদ্ধ মানব পাচারকারীরা মালয়েশিয়ায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে রোহিঙ্গাদের নৌকায় করে সাগর পথে পাচার করে। থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়া অভিমুখী বিপদসংকুল এই যাত্রায় সাগরে নৌকা ডুবে অনেকের মৃত্যু হয়। রোহিঙ্গাদের মধ্যে সাগরপথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ড যাওয়ার যে প্রবণতা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে তা উদ্বেগজনক। পাচারকারী চক্র মালয়েশিয়া কিংবা থাইল্যান্ডে সচ্ছল জীবনের স্বপ্ন দেখিয়ে রোহিঙ্গাদের প্রলুব্ধ করে। ২০১৫ সালে মানব পাচারের ঘটনা ফাঁস হয়ে যায় এবং উদঘাটিত হয় পাচারকারী চক্রের সদস্যরা মালয়েশিয়ায় নেওয়ার নাম করে রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশিদের একাংশকে ট্রলার থেকে সাগরে ফেলে দিয়েছে। মালয়েশিয়ায় নেওয়ার নামে থাইল্যান্ডের বনে আটক করে তাদের দাস হিসেবে বিক্রি করার অভিযোগও ওঠে সে সময়ে। দুই দেশের বনে অনেকগুলো গণকবরও আবিষ্কৃত হয়। মানব পাচার রোধে পাচারকারীদের নিবৃত্ত করতে সরকার কঠোর পদক্ষেপ নেবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর