শনিবার, ১৭ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

অস্ত্র প্রতিযোগিতা

বিশ্বশান্তির জন্য অশনিসংকেত

মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিরক্ষাসংক্রান্ত প্যানেল যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা ব্যয় আরও বাড়ানোর সুপারিশ করেছে। তাদের আশঙ্কা, শতাব্দী ধরে সামরিক ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের যে একক আধিপত্য চলছে তার অবসান ঘটতে চলেছে। শক্তিধর দেশ হিসেবে উঠে আসছে রাশিয়া ও চীন। এ দুটি দেশের যে কারও সঙ্গে যুদ্ধ বাধলে হেরে যাবে যুক্তরাষ্ট্র। অবিলম্বে প্রতিরক্ষার বরাদ্দ না বাড়ালে বিপদ ঘটে যেতে পারে বলেও তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। চলতি বছর পেন্টাগনের প্রতিরক্ষা খাতের বাজেট বরাদ্দ ৭০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার; যা রাশিয়া ও চীনের মোট প্রতিরক্ষা বাজেটের অনেক বেশি। তবে চীন-রাশিয়ার মতো শক্তির সঙ্গে লড়তে গেলে এ বরাদ্দ যথেষ্ট নয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্যানেলের রিপোর্টে। তারা প্রতিরক্ষা ব্যয় অন্তত ৩ থেকে ৫ শতাংশ বৃদ্ধির সুপারিশ করেছেন। ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের ডজনখানেক সাবেক শীর্ষ কর্তাকে নিয়ে গঠিত মার্কিন কংগ্রেসের এ প্যানেল সরকারের প্রতিরক্ষাসংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখে পরামর্শ দেয়। তারা আমেরিকার জাতীয় প্রতিরক্ষানীতির তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তায় ভয়ঙ্কর ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছে মস্কো ও বেইজিং। মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিরক্ষাসংক্রান্ত প্যানেলের বক্তব্যে প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ানোর যে যুক্তি দেখানো হয়েছে তাতে বিশ্ববাসীর উৎকণ্ঠিত হওয়ারই কথা। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে চীনের সামর্থ্য সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বাড়লেও রাশিয়ার ক্ষেত্রে খুব বেশি বাড়েনি। দুই দেশের প্রতিরক্ষা ব্যয়ের চেয়েও যুক্তরাষ্ট্রের ব্যয় এখনো অনেক বেশি। বিশেষত পারমাণবিক অস্ত্রশস্ত্রের সামর্থ্যরে দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র এখন একাই এক শ। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জমানায় যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আধিপত্যবাদী মনোভাব বাড়ছে। প্রতিরক্ষা ব্যয় আরও বৃদ্ধি পেলে তা দুনিয়াজুড়ে অস্ত্র প্রতিযোগিতা বাড়াবে ও অকল্যাণ বয়ে আনবে। যুক্তরাষ্ট্রের জন্যও তা কোনো ভালো ফল বয়ে আনবে কিনা তা সংশয়ের ঊর্ধ্বে নয়। স্বভাবতই, অস্ত্র প্রতিযোগিতার বদলে শান্তির প্রতি সব জাতির অঙ্গীকারই বিশ্বশান্তি ও সব জাতির অস্তিত্বের জন্য শুভফল বয়ে আনতে পারে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর