প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা শুরু হয়েছে রবিবার। এ পরীক্ষার কারণে রাজধানী ঢাকার যানজট অসহনীয় হয়ে উঠেছিল প্রথম দিনেই। অভিভাবকদেরও শিশু পরীক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়ে আসা ও পরীক্ষা শেষে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ভুগতে হয়েছে বাড়তি ঝামেলায়। প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার আয়োজন সরকারের কর্তাব্যক্তিদের মোটা বুদ্ধির প্রতিফলন বলে ব্যাপক সমালোচনা রয়েছে। এর মাধ্যমে শিশু শিক্ষার্থীদের ওপর পাবলিক পরীক্ষা নামের যে মহা বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়, তা কতটা নৈতিক এ নিয়েও প্রশ্ন কম নয়। প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় এ বছর ৩০ লাখ ৯৫ হাজার ১২৩ জন শিক্ষার্থীর অংশ নেওয়ার কথা। কিন্তু প্রথম দিন ইংরেজি পরীক্ষায় ১ লাখ ৬০ হাজার শিক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল। এর মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীতে ৬৩ হাজার ৮৩২ ছাত্র ও ৫৩ হাজার ৮৭১ জন ছাত্রী। অর্থাৎ শতকরা ৪ দশমিক ২৪ শতাংশ পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল। ইবতেদায়িতে অনুপস্থিত ছিল ৪২ হাজার ৪১৫ জন, শতকরা হিসাবে ১৩ দশমিক ২৮ শতাংশ। অনুপস্থিত শিক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ২৬ হাজার ৬ ও ১৬ হাজার ৪০৯ জন ছাত্রী। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর থেকে জানানো হয়েছে, প্রাথমিক সমাপনীতে কোনো শিক্ষার্থী বহিষ্কার হয়নি। তবে ইবতেদায়িতে চট্টগ্রামে একজন শিক্ষার্থী বহিষ্কৃত হয়েছে। প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর অনুপস্থিত থাকা উদ্বেগজনক। এসব শিক্ষার্থী প্রাথমিক পর্যায়েই ঝরে পড়েছে না অনুপস্থিত থাকার পেছনে অন্য কোনো রহস্য আছে, তা তদন্ত করে দেখা দরকার। অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের সত্যিকার অর্থে অস্তিত্ব আছে কিনা সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা উচিত। আশার কথা, প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি পরীক্ষার সময় দুই মন্ত্রী প্রাথমিক পর্যায়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত একটি পাবলিক পরীক্ষার পক্ষে মত দিয়েছেন। বলেছেন এ বিষয়টি মন্ত্রিসভার বৈঠকে আলোচিত হবে। আমরা এ শুভবুদ্ধিকে স্বাগত জানাই এবং আশা করতে চাই, শিশু শিক্ষার্থীদের সমাপনী পরীক্ষার নামে পঞ্চম শ্রেণিতে যে বাড়তি বোঝা চাপানো হয়েছে কয়েক বছর ধরে, এ বছরই তার ইতি ঘটবে। পাবলিক পরীক্ষার বোঝা না বাড়িয়ে শিক্ষার মান উন্নত করার জন্য সরকার কার্যকর ব্যবস্থা নেবে- এমনটিও কাক্সিক্ষত।