বুধবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
বিচিত্রতা

দালাইলামা নির্বাচন

কোনো নির্বাচনের মাধ্যমে নয়, বরং একজন দালাইলামার মৃত্যুর পর এক আশ্চর্য প্রথা অনুসরণ করে খুঁজে বের করা হয় আরেকজন দালাইলামাকে। তিব্বতের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত ১৪ জন দালাইলামাকে খুঁজে বের করা হয়েছে। তিব্বতের বৌদ্ধ ‘গেলুগ’ শাখার বিশ্বাস অনুসারে দালাইলামা একবার দেহত্যাগ করলেও তার বার বার জম্ম  হয়। পৃথিবীর অনাগত মানুষকে বুদ্ধের শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতেই তার এই পুনর্জম্ম  । তাই একজন দালাইলামার মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে তিব্বতের প্রধান লামারা একত্র হয়ে খোঁজ শুরু করেন নতুন দালাইলামারূপী শিশুকে। মূলত তিনটি প্রক্রিয়ায় খুঁজে বের করা হয় শিশু দালাইলামাকে। একজন দালাইলামার মৃত্যুর পরই প্রধান লামাদের কেউ একজন তাদের স্বপ্নে শিশু দালাইলামাকে খুঁজে পাওয়ার জন্য কী করতে হবে তার ইঙ্গিত পান। সে অনুসারে কাজ করে শিশু দালাইলামাকে খুঁজে বের করা হয়।

প্রধান লামাদের কেউ যদি স্বপ্নে কোনো নির্দেশ না পান তাহলে পূর্ববর্তী দালাইলামার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সময় যে ধোঁয়া নির্গত হয়, লামারা তার গতিপথ অনুসরণ করেন। সেই ধোঁয়ার গতিপথ অনুসরণ করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নতুন জম্ম  নেওয়া শিশুর মধ্যে দালাইলামাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন তারা।

যখন অন্য কোনো প্রক্রিয়ায় শিশু দালাইলামাকে খুঁজে পাওয়া না যাবে, তখন লামও-লা-সো নামক পাহাড়ঘেরা এক সরোবরের পাড়ে ধ্যান শুরু করেন লামারা। ৫ হাজার ৩০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত ২ বর্গ কিলোমিটারের এই সরোবরের ব্যাপারে তিব্বতে প্রচলিত আছে অনেক রূপকথা।

তবে তিব্বতের বৌদ্ধধর্ম অনুসারীদের মতে এই সরোবরের দেবী পালদেন লামো প্রথম দালাইলামাকে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে তিনি দালাইলামাদের পুনর্জম্মে র ধারা অব্যাহত রাখবেন। তাই প্রধান লামারা শিশু দালাইলামার ব্যাপারে কোনোরূপ ইঙ্গিত পাওয়ার আগ পর্যন্ত অব্যাহত রাখেন সেই ধ্যান। ১৯৩৫ সালে ১৩তম দালাইলামার মৃত্যুর পর তার পরবর্তী তেনজিন গিয়াৎসুকে খুঁজে বের করতে চার বছর ধ্যানরত ছিলেন প্রধান লামারা। চার বছরের মাথায় লামারা তার ব্যাপারে অবহিত হয়ে তাকে খুঁজে বের করেন।

মুন্সি জামিল উদ্দিন

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর