শুক্রবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

সর্বনাশা মাদক

জনসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে

মাদকাসক্ত এক বাবা তার শিশু সন্তানের লাশ ঘরে রেখে দা হাতে আরেক শিশু সন্তানকে হত্যার হুমকি দিয়ে ৬ ঘণ্টা ধরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্থানীয় অধিবাসীদের উৎকণ্ঠার মধ্যে রাখেন। পুলিশ অবশ্য কৌশলে তাকে বাড়ি থেকে বের করে এনে আটক করতে সক্ষম হয়। কাফনে মোড়ানো শিশু সন্তানের লাশও উদ্ধার করেন র‌্যাব-পুলিশ সদস্যরা। বাসা থেকে উদ্ধার করেন জিম্মি করে রাখা চার বছরের বড় সন্তানসহ স্থানীয় মসজিদের ইমাম ও একজন খাদেমকে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটেছে গত বুধবার। দা হাতে সন্তানকে জিম্মি করার খবরে সকাল ৮টা থেকে বাংলামোটরের ১৬ লিংক রোডে ওই বাসার সামনে অবস্থান নেন পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা। মাদকাসক্ত বাবা নূরুজ্জামান কাজলের সঙ্গে তারা যোগাযোগের চেষ্টা করেন। অবশেষে ৬ ঘণ্টা পর জানাজার কথা বলে কাজলকে বাইরে নিয়ে আসে পুলিশ। এর পরই তাকে আটক করা হয়। বাসার ভিতর থেকে কাফনের কাপড়ে মোড়ানো সাফায়েতের লাশ খুঁজে পায় পুলিশ। সেইসঙ্গে উদ্ধার করা হয় বড় সন্তান সুরাইতকে। মাদকাসক্ত কাজল ১৬ লিংক রোডের পৈতৃক বাড়িতে অন্য তিন ভাইসহ থাকতেন। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ভাইয়েরা বাড়ি ছেড়ে চলে যান। মাদকাসক্ত স্বামীর অত্যাচারে গত ঈদুল আজহার সময় স্ত্রী মালিহা চলে যান বাপের বাড়ি। তবে কাজল জোর করে দুই সন্তানকে রেখে দেন। ছোট সন্তান সাফায়েত সম্প্রতি জন্ডিসে আক্রান্ত হয়। কাজলের বাসগৃহ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হলেও মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সাফায়েতের মৃত্যুর খবর সকালেই কাজল মসজিদের মাইকে প্রচার করান। তার দাফনের জন্য কাফনের কাপড়ও কিনে আনেন। মসজিদ থেকে ইমাম সাহেব ও খাদেমকে নিয়ে আসেন বাসায়। তবে তার উন্মত্ত আচরণে ইতিমধ্যে বাড়ির সামনে লোকজন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জড়ো হওয়ায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং দা হাতে বড় ছেলেকে খুন করার হুমকি দেন। মাদকাসক্তি একজন মানুষকে কতটা কান্ডজ্ঞানহীন করে তোলে বাংলামোটরের ঘটনা তার প্রমাণ। এ ঘটনা মাদকাসক্তির বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে আমরা এমন আশাই করতে চাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর