বুধবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

মহৎ মানবিক গুণ সততা

মুহাম্মাদ ওমর ফারুক

মহৎ মানবিক গুণ সততা

সততা, সত্যনিষ্ঠা ও সত্যবাদিতা মহৎ মানবিক গুণ। সত্যের মাধ্যমে প্রকৃত অবস্থা ও ঘটনা প্রকাশ পায় বলে এ দ্বারা জীবনের মহৎ লক্ষ্যের দিকে অগ্রসর হওয়া যায়। সত্যকে আঁকড়ে ধরলে জীবনে প্রকৃত সাফল্য আসে। এজন্যই আল্লাহর নবী ও রসুলরা সত্য প্রতিষ্ঠায় আজীবন সংগ্রাম করেছেন। সমাজে সত্যবাদীকে সবাই বিশ্বাস করে। আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও সত্যবাদিতার কারণে আল আমিন উপাধি লাভ করেছিলেন। প্রকৃত মানুষ বা ইনসানে কামিল হওয়া যায় না যেসব গুণ ছাড়া, সততা তার অন্যতম। এ সততা রক্ষা করতে হয় প্রতিনিয়ত চলনে-বলনে, আচার-আচরণে, আমানতদারিতায়। জীবনের সব ক্ষেত্রে এ নৈতিক গুণ অর্জন করতে হয়। জীবনের পরতে পরতে অনুশীলন করতে হয়। একটি মহৎ মানবিক গুণ হিসেবে নিজ নিজ চরিত্রে একে প্রতিস্থাপন করতে হয় এবং তাকে সংরক্ষণ করে চলতে হয়। বিষয়টি জীবনঘনিষ্ঠ, প্রাত্যহিক চর্চার ও অনুশীলনের। সৎ মানুষের মর্যাদা পৃথিবীর তাবৎ মানবগোষ্ঠী দিয়ে থাকে। তার সম্মান সবার কাছে স্বীকৃত, প্রতিষ্ঠিত। মুমিন মুসলিমের জন্য সততা এক অপরিহার্য গুণ। আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যানুসারীদের সঙ্গী হও।’ সূরা তওবা, আয়াত ১১৯।

ইরশাদ হয়েছে, ‘যদি তারা সত্য বলত তবে তা তাদের জন্য উত্তম হতো।’ সূরা মুহাম্মাদ, আয়াত ২১।

‘সত্যবাদীদের তাদের সত্যকথনের জন্য আল্লাহ প্রতিদান দেবেন।’ সূরা আহজাব, আয়াত ২৪।

মানবজীবনে সততা অবলম্বন স্রষ্টার নির্দেশ। তাঁর নির্দেশ লঙ্ঘন করার পরিণাম ভয়াবহ। স্রষ্টার কাছে জীবনের হিসাব দেওয়া ও জবাবদিহির ভয় জাগরূক রাখা সততা অবলম্বনের জন্য সহায়ক। একই সঙ্গে বিষয়টিকে ব্যবহারিক জীবনে প্রয়োগ করার জন্য অনুশীলন প্রয়োজন এবং সে ক্ষেত্রে সত্যবাদীদের সঙ্গে ওঠা-বসা, তাদের সাহচর্য, তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখা খুবই উপযোগী।

সততা ব্যক্তিমানুষকে উন্নত করে; গ্রহণযোগ্যতা ও উপযোগিতা বৃদ্ধি এবং মহিমান্বিত করে। সততা মানুষকে মুক্তি দেয়। সততা অবলম্বনের জন্য ইহকালীন-পরকালীন পুরস্কার ও প্রাপ্তি আছে এবং এটাই সংগত। জীবনে সততা অবলম্বন না করে মুত্তাকি হওয়া যায় না। সততা অবলম্বন করলে একজন মানুষের মধ্যে আরও অনেক গুণ-বৈশিষ্ট্যের সমাবেশ ঘটে। আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘শুধু তোমাদের চেহারাগুলো পূর্বমুখী ও পশ্চিমমুখী করা পুণ্য নয়। বরং পুণ্যবান হচ্ছে সে যে বিশ্বাস করল আল্লাহকে, আখেরাতে, ফেরেশতা, কিতাব ও নবীদের এবং সম্পদ দান করল তার প্রতি ভালোবাসার আত্মীয়দের, এতিমদের, মিসকিনদের, প্রবাসী পথচারীদের ও দাসমুক্তির জন্য এবং সালাত কায়েম করল, জাকাত প্রদান করল এবং তারা যারা অঙ্গীকার করলে তাদের অঙ্গীকার পূর্ণকারী এবং বিদ্রুপ ও দুর্যোগ ও যুদ্ধকালে যারা সহনশীল। ওরাই তারা,  যারা সত্য বলেছে এবং শুধু ওরাই মুত্তাকি।’ সূরা বাকারা, আয়াত ১৭৭।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর