শুক্রবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস

ঘাতক দালালদের শাস্তি নিশ্চিত হোক

রক্তস্নাত শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ। মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে প্রতি বছর ১৪ ডিসেম্বরকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালন করা হয়। বিনম্র শ্রদ্ধায় কৃতজ্ঞ জাতি তার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ করে। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বুদ্ধিজীবীরা ছিলেন পাকিস্তানি হানাদারদের জিঘাংসার প্রধান টার্গেট। বাঙালি জাতির জাগরণে অগ্রণী ভূমিকার কারণে বুদ্ধিজীবীদের নিধন করা হয় সুপরিকল্পিতভাবে। উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করা। ২৫ মার্চ রাতেই প্রাণ হারান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কজন খ্যাতনামা অধ্যাপকসহ শতাধিক বুদ্ধিজীবী। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসে ধারাবাহিকভাবে এ হত্যাকাণ্ড অব্যাহত ছিল। বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধের মহান বিজয়ের মাত্র এক দিন আগে ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদারদের দোসর আলবদর বাহিনীর সদস্যরা পরিকল্পিতভাবে ব্যাপকসংখ্যক বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করে। বাংলাদেশের মানুষ যাতে স্বাধীন দেশে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে তা নিশ্চিত করতে পাকিস্তানি বাহিনীর পদলেহীরা এ হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়। মহান মুক্তিযুদ্ধে যেসব বুদ্ধিজীবী দেশ ও জাতির জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন তার মধ্যে আছেন অধ্যাপক জি সি দেব, অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী, ড. মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, রাশেদুল হাসান, ড. আনোয়ার পাশা, সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেন, শহীদুল্লাহ কায়সার, নিজামুদ্দিন আহমেদ, গিয়াসউদ্দিন আহমদ, ডা. ফজলে রাব্বী, ডা. আলিম চৌধুরী, সাহিত্যিক-সাংবাদিক সেলিনা পারভীনসহ নাম জানা-অজানা অনেকে। বুদ্ধিজীবী হত্যায় মূলত ভূমিকা রেখেছে পাকিস্তানি হানাদারদের এ-দেশীয় বশংবদরা। আলবদর, আলশামস ও রাজাকার বাহিনীর মনুষ্যবেশী পশুরা বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হানা না দিলে, তাদের চিনিয়ে না দিলে তারা যে প্রাণ হারাতেন না তা সহজেই অনুমেয়। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, এই ঘাতক-দালালরা ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকে ছিল ধরাছোঁয়ার বাইরে। তবে অপরাধীদের শেষ রক্ষা হয়নি। গত পাঁচ বছরে বেশ কয়েকজন যুদ্ধাপরাধীকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারের মাধ্যমে। আরও কয়েকজনের জন্য অপেক্ষা করছে ফাঁসির দড়ি। ’৭১-এ ঘাপটি মেরে থাকা ঘাতক ও তাদের এজেন্টরা এ বিচার প্রক্রিয়া বানচালের জন্য নানামুখী ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। বুদ্ধিজীবী হত্যাসহ ’৭১-এর

সব মানবতাবিরোধী অপরাধের দ্রুত বিচার সম্পন্ন করে এসব ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর