শুক্রবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ইসলামে বুদ্ধিজীবীদের সর্বোচ্চ সম্মান দেওয়া হয়েছে

মাওলানা মুহাম্মদ আশরাফ আলী

ইসলাম আলোকিত সমাজ গঠনের তত্ত্ব হাজির করেছে মানবজাতির সামনে। এ সমাজ গঠনে বুদ্ধিজীবীদের অগ্রণী ভূমিকাকে গুরুত্ব দিয়েছে ইসলাম। অন্ধকার থেকে আলোর পথে উত্তরণে ইসলাম জ্ঞানচর্চার আলোক-বর্তিকা বুদ্ধিজীবীদের অতুলনীয় সম্মান দিয়েছে। আল কোরআনের প্রথম আয়াতেই আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘পড় তোমার প্রতিপালকের নামে; যিনি সৃষ্টি করেছেন।’ মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসলমানদের সবসময় জ্ঞান সাধনায় উদ্বুদ্ধ করেছেন। তিনি ঘোষণা করেন, ‘শিক্ষিত সম্প্রদায় নবীর উত্তরাধিকারী। যে জ্ঞানকে ব্রত হিসেবে গ্রহণ করেছে, সে তার এক বিরাট অংশ অধিকার করেছে এবং যে জ্ঞানার্জনের পথে নিজেকে নিয়োজিত করে আল্লাহ তার জন্য বেহেশতের পথ সুগম করেন।’ ‘জ্ঞানের অন্বেষণে যে তার বাসস্থান ত্যাগ করে সে আল্লাহর পথে ভ্রমণ করে।’ মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিভিন্ন যুদ্ধে বন্দী অমুসলিম বুদ্ধিজীবীদের মুক্তিপণ হিসেবে আর্থিক বা বৈষয়িক সুবিধার বদলে তারা কোনো মুসলমানকে অক্ষরজ্ঞান দান করলে মুক্তি দেওয়া হবে এমন শর্ত নির্ধারণ করতেন। এক হাদিসে বলা হয়েছে, ‘রাতে কিছু সময় জ্ঞানচর্চা করা সারা রাতের নফল ইবাদতের চেয়ে উত্তম।’ দারিমির সুনান থেকে মিশকাতে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে এ দেশের বুদ্ধিজীবীরা পাকিস্তানি হানাদারদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। এ হত্যাকাণ্ড যে ইসলামের দৃষ্টিতে সাধারণ হত্যাকাণ্ডের চেয়েও জঘন্য তা বুদ্ধিজীবীদের প্রতি ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই অনুমান করা যায়। ইসলাম যে কোনো অবৈধ হত্যাকাণ্ডকে জঘন্য অপরাধ বলে মনে করে। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদাররা বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালায়। ধর্ষণ, অগ্নি-সংযোগসহ নানা অপরাধে তারা জড়িত ছিল। আমাদের দেশের কেউ কেউ এসব অপকর্মে মদদ জুগিয়েছে। বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডেও তাদের ভূমিকা ছিল। ইসলাম কোনো অবস্থায়ই জালিমদের সহায়তা করাকে অনুমোদন করে না। হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘সত্যকে পরাভূত করার জন্য যে ব্যক্তি জালিমকে সাহায্য করল সে আল্লাহ ও তাঁর রসুলের হেফাজত-বহির্ভূত হয়ে গেল।’

                লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক

 

সর্বশেষ খবর