নববর্ষ উদ্যাপন মানবসভ্যতার অনুষঙ্গ হিসেবে বিবেচিত হয়। সভ্যতা শুরুর পর থেকেই সময় গণনা তথা দিন-রাত, মাস-বছরের হিসাব রাখার বিষয়টি গুরুত্ব পায়। তৈরি হয় বর্ষপঞ্জি। এর প্রথম দিনটি নববর্ষ হিসেবে পালনের রীতি গড়ে ওঠে বিশ্বের নানা প্রান্তে। কালের বিবর্তনে গ্রেগরীয় ক্যালেন্ডারের ১ জানুয়ারি দিনটি দুনিয়াজুড়ে নববর্ষ হিসেবে পালিত হচ্ছে। গত রাত ১২টায় বিদায় নিয়েছে স্মৃতিমণ্ডিত ২০১৮ সাল। ১২টা ১ মিনিটে শুরু হয়েছে ২০১৯ সালের পথপরিক্রমা। নববর্ষ প্রতিটি মানুষের জীবনে বিশেষ তাৎপর্যের দাবি রাখে। নতুন বছর সামনে রেখে বা নতুন বছরে পা দিয়ে মানুষ শপথ নেয় আগত দিনগুলোকে সুন্দরভাবে সাজানোর। বিদায়ী বছরের যা কিছু ভুলত্রুটি, যা কিছু গ্লানিময় পরিহার করার। ব্যক্তিজীবনের পাশাপাশি জাতীয়ভাবেও নতুন বছরটি ইতিবাচক হয়ে দেখা দেবে- এমনটিও আশা করা হয়। বাংলাদেশের জন্য বিদায়ী বছরটি ছিল অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাওয়ার। প্রায় ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে বিদায়ী বছরে। বিদায়ী বছরের শেষ ভাগে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে প্রতিপক্ষের ধস নামিয়ে রেকর্ডসংখ্যক আসন নিয়ে জয়ী হয়েছে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট। ইতিহাসের বিবেচনায় বাঙালি এক প্রাচীন জাতি। গাঙ্গেয় বন্ডদ্বীপের অধিবাসীদের রয়েছে ৫ হাজার বছরের ঐতিহ্য। আমাদের আধুনিক ইতিহাসও অহংকার করার মতো। ভাষা ও স্বাধীনতার জন্য এ জাতির আত্মত্যাগ ইতিহাসেরই অংশ। প্রকৃতি উদারভাবে আমাদের দান করেছে উর্বর মাটি। এ মাটিতে বীজ বুনলেই সহজে ভরে যায় ফসলের মাঠ। এ দেশের নদ-নদী, খাল-বিল, হাওর-বাঁওড় যত্ন পেলে সোনার খনিতে রূপান্তরিত হয়। মানবসম্পদে সমৃদ্ধ এ দেশকে দরিদ্র বলার অবকাশ নেই। বাংলাদেশের মানুষ প্রতিকূল অবস্থাকে জয় করার সাহসও রাখে। আমাদের রয়েছে পরিশ্রমী মানুষ। ঐক্যবদ্ধভাবে প্রয়াস চালালে এ জাতিকে সমৃদ্ধ বিশ্বের কাতারে নিয়ে যাওয়া কঠিন কিছু নয়। নতুন বছরে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধাকে কাজে লাগাতে হবে। দারিদ্র্যবিমোচন ও জাতীয় অগ্রগতির প্রশ্নে গড়ে তুলতে হবে সুদৃঢ় ঐক্য।