বুধবার, ২ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা
ইতিহাস

প্রতিশোধস্পৃহা

তুরহান সুলতান কোসেম সুলতানের অন্যায়ের প্রতিশোধ নিতে চাইলেন। তুরহান সুলতানের বয়স যখন মাত্র ১২ বছর তখন ক্রিমিয়ার খান তাকে উপহার হিসেবে তোপকাপি প্রাসাদে পাঠান। কোসেম সুলতান নিজে ইবরাহিমের জন্য তুরহান সুলতানকে খাস দাসী হিসেবে পছন্দ করেন। কিন্তু তুরহান সুলতান বিনা রক্তপাতে নিজের পদ দখল করতে চাইলেন। তুরহান সুলতানের পক্ষে ছিল উজিরে আজম ও কোসেম সুলতানের পক্ষে ছিল জেনেসারিরা। কোসেম সুলতান ভ্যালিদে সুলতান পদকে গুরুত্বপূর্ণ বলে ধরে নিয়ে জেনেসারিদের কোসেম সুলতানের বিরুদ্ধে যাওয়ার জন্য প্রভাব খাটান। ক্ষমতার যুদ্ধে কোসেম সুলতান তার নাতি মেহমেদকে সরিয়ে আরেকজনকে সিংহাসনে বসানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তার পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়। তুরহানের আদেশে হোক বা অন্য কারও আদেশে কোসেম সুলতান তার ব্যর্থ চেষ্টার তিন বছর পর খুন হন। মনে করা হয়, তুরহান সুলতানই এ আদেশ দিয়েছিলেন। ১৬৫১ সালে অটোমান সাম্রাজ্যের এই ক্ষমতাধর নারীর মৃত্যুর পর তাকে তার স্বামী প্রথম আহমদের কবরের পাশে কবর দেওয়া হয়।

অটোমান সাম্রাজ্যের সবচেয়ে ক্ষমতাধর এই নারী সুলতান না হয়েও সুলতানের মতো করে সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করেছেন যা অটোমান সাম্রাজ্যের ৮০০ বছরের ইতিহাসে আর কোনো নারী করতে পারেনি। কোসেম সুলতান তার এই দুঃসাহসিক কাজের জন্য অটোমান নারীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিখ্যাত হয়ে আছেন।

কোসেম সুলতান সাম্রাজ্যে সাধারণ মানুষ ও শাসক শ্রেণি উভয়ের জন্য দয়ালু ভূমিকা রেখেছেন। তিনি প্রতি জেলখানায় গিয়ে কিছু মানুষকে মুক্ত করে দিতেন। তিনি গরিব পরিবারে মেয়েদের দক্ষ করে তাদের বিয়ে দিতেন। তিনি ১৬৪০ সালে উসকুদারে একটি মসজিদ ও স্কুল তৈরি করেন। তিনি ভ্যালিদে মাদ্রাসা তৈরি করেন, মানুষের জন্য পানির ঝরনা তৈরি করেন। তিনি ইস্তাম্বুলের বাইরেও পানির ঝরনা তৈরি করেছেন। তিনি মিসরের বন্যাদুর্গত ও মক্কার গরিব মানুষদের সাহায্য করেছেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর