দেশের যোগাযোগব্যবস্থায় যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হতে যাচ্ছে দ্রুতগতির ঢাকা বাইপাস। ৪৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বাইপাস সড়কটি নির্মাণ হচ্ছে জয়দেবপুর-দেবগ্রাম-ভুলতা মদনগঞ্জ পর্যন্ত। এটি নির্মাণ হলে চট্টগ্রামসহ দেশের উত্তরাঞ্চলে পণ্য পরিবহনে গতি আসবে। ১২০ কিলোমিটার বেগে পণ্য পরিবহন সম্ভব হবে ঢাকা বাইপাসে। এর ফলে পণ্য নিয়ে ট্রাক, ট্যাংকলরির মতো ভারী যানবাহন ঢাকায় ঢোকার প্রয়োজন হবে না। রাজধানীর যানজট নিরসনেও তা অবদান রাখবে। বাইপাস সড়কের দুই পাশে নিরাপত্তামূলক বেষ্টনী বা সীমানাপ্রাচীর থাকবে যাতে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে গাড়ি চলতে পারে। চার লেনের এ সড়কে কোনো মোড় থাকবে না। ৪৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা বাইপাস সড়কে বর্তমানের দুই লেনের বদলে চার লেনের এক্সপ্রেসওয়ে ও দুই পাশে ধীরগতির যান চলাচলের জন্য পৃথক লেন নির্মাণ করা হবে। সড়কটি উত্তরে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক ও দক্ষিণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ককে সংযুক্ত করবে। এর বাইরে ভুলতায় ঢাকা-সিলেট ও ভোগরায় সংযোগ ঘটাবে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে রাজধানী ঢাকার ভিতরে প্রবেশ ছাড়াই পূর্বাঞ্চল থেকে উত্তরাঞ্চলে যানবাহন চলাচল সম্ভব হবে। সড়কটিতে নির্বিঘ্নে যানবাহন চলাচলের জন্য চারটি ইন্টারচেঞ্জ, পাঁচটি টোল প্লাজা, দুটি রেলওয়ে ওভারপাস ও চারটি ওভারপাস নির্মাণ করা হবে। এর বাইরে ছয়টি সেতু, প্রশস্ত পথচারী ও ধীরগতির যানবাহনের জন্য একাধিক আন্ডারপাস নির্মাণ করা হবে। পিপিপির ভিত্তিতে সড়কটি নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৩ হাজার ৩৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২২৩ কোটি টাকা দেবে বাংলাদেশ সরকার। অবশিষ্ট টাকা বিনিয়োগ করবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, যা সরবরাহ করবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক। বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য দ্রুতগতিতে বাড়ছে। এ বাস্তবতায় দেশজুড়ে দ্রুত পণ্য পরিবহনে ঢাকা বাইপাস কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। পণ্য পরিবহনের সুবিধার্থে এ ধরনের প্রকল্প খুবই প্রাসঙ্গিক। আশা করা যায়, ঢাকা বাইপাসের অভিজ্ঞতায় দেশের বিভিন্ন স্থানে আরও কিছু সড়ক তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হবে।