রবিবার, ৬ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

বই বিতরণে দুর্নীতি

অসৎ শিক্ষক ও স্কুল কমিটির শাস্তি কাম্য

বর্তমান সরকারের সবচেয়ে প্রশংসিত পদক্ষেপ প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে বই বিতরণের কর্মসূচিকেও বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে শিক্ষক ও স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি নামধারী একশ্রেণির প্রতারক। তারা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিনামূল্যের বইয়ের বদলে অর্থ আদায় করছেন। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বছরের প্রথম দিনে সারা দেশে বিনামূল্যের বই বিতরণের নিয়ম থাকলেও বিভিন্ন স্কুলে অর্থের বিনিময়ে বই দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিনামূল্যে বই নিয়ে বাণিজ্য করেছেন অনেক স্কুলের শিক্ষক ও পরিচালনা পর্ষদ সদস্য। নাটোরের সিংড়ায় মহিষমারী উচ্চবিদ্যালয়ে টাকার বিনিময়ে ছাত্রছাত্রীদের বই দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্কুল ম্যানেজিং কমিটি ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। স্কুলের ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির ৪৫০ শিক্ষার্থীর প্রত্যেককে বই নিতে গুনতে হয়েছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। এমনকি টাকা দিতে না পারায় কোনো কোনো শিক্ষার্থীকে বই দেওয়া হয়নি। লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ী উচ্চবিদ্যালয়ে সেশন ফি ও অগ্রিম কয়েক মাসের বেতন ছাড়া নতুন বই না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ক্ষেত্রে যারা অগ্রিম বেতন ও সেশন ফি পরিশোধে ব্যর্থ হচ্ছে তাদের হাতে পৌঁছেনি নতুন বই। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় খেপুপাড়া মডেল সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, খেপুপাড়া বালিকা বিদ্যালয়, মহিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, খেপুপাড়া নেছারউদ্দিন ফাজিল মাদ্রাসাসহ অন্তত ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন বই বিতরণের ক্ষেত্রে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। নতুন ভর্তিসহ সেশন ফি বাবদ ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা নেওয়া হয়েছে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। বিনামূল্যের বই বিতরণকে কেন্দ্র করে কোনো কোনো স্কুলশিক্ষক ও স্কুল কমিটির দুর্বিনীত সদস্যের অসততার জন্য সরকারের সুনাম প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। উল্লেখ্য, গত ১০ বছর ধরে চলছে বিনামূল্যে বই বিতরণ। এ বছর নির্বাচনের ডামাডোলে প্রশাসন ব্যস্ত থাকা সত্ত্বেও এ কর্মসূচির ব্যত্যয় ঘটেনি। শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিনেই ৩৫ কোটির বেশি বই বিতরণ করা হয়েছে। আমরা আশা করব, বই বিতরণ নিয়ে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনিয়ম ঘটেছে, এজন্য যারা দায়ী তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর