এশিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিম কোনে অবস্থিত ‘জাজিরাতুল আরব’ বা আরব উপদ্বীপ যেখান থেকে একদা ইসলামের অমীয় বাণী উচ্চারিত হয়েছিল- ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ।’ কিংডম অব সৌদি এরাবিয়া তথা সংক্ষেপে সৌদি আরব, যেটার আয়তন প্রায় সাড়ে ২২ লাখ বর্গকিলোমিটার ও লোকসংখ্যা মাত্র এক কোটি, এ দেশটি আরব উপদ্বীপের শতকরা ৯০ ভাগ এলাকাব্যাপী বিস্তৃত। সম্প্রতি সস্ত্রীক সেদেশে সম্ভবত জীবনের সর্বশেষ উমরাহ পালন করা উপলক্ষে বেশ কিছু মজার ব্যাপার ঘটেছে। কিন্তু এ সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনায় পরে যাওয়া যাবে। তৎপূর্বে কিছু প্রাসঙ্গিক প্রসঙ্গ সেরে নিই।
দেশটির প্রতিষ্ঠাতা আমাদের ভাষায় জাতির পিতা- আমির আবদুল আজিজ ইবনে সউদ অর্থাৎ সউদের পুত্র আবদুল আজিজ ছিলেন অত্যন্ত বিচক্ষণ ব্যক্তি। এ প্রসঙ্গে দুটো ঘটনার কথা, যেগুলো আমি পূর্বাহ্নে সৌদি আরবে অবস্থানকালে পড়েছিলাম, আমার প্রায়শই মনে পড়ে- এক. শাসনকার্য পরিচালনার প্রারম্ভিককালে তিনি তার দেশে টেলিফোন ব্যবস্থার প্রবর্তন করতে চাইলে কট্টরপন্থি মোল্লারা আপত্তি করে বসলেন। তাদের মতে, ইসলামিক দেশে ‘নাসারা’ অর্থাৎ খ্রিস্টানদের আবিষ্কৃত যন্ত্র স্থাপন ও ব্যবহার মোটেই জায়েজ তথা সিদ্ধ হবে না। তিনি বললেন, আচ্ছা ইতিপূর্বে এতদুদ্দেশ্যে স্থাপিত টেলিফোন এক্সচেঞ্জ ও আমার প্যালেসের মধ্যে তার সংযোগ দেওয়া হোক এবং এক্সচেঞ্জে কোরআন শরিফ পাঠ করা হোক। যদি আমি প্যালেসে বসে তারের অপর প্রান্তে টেলিফোন সেটের মাধ্যমে সেটা শুনতে পাই, তাহলে বুঝতে হবে বিষয়টাতে মহান আল্লাহর স্যাংশন আছে। ঠিক তাই করা হলো এবং বিষয়টির সুরাহা সহজেই হয়ে গেল। কেননা কোরআনের বাণী টেলিফোনের তারের মধ্য দিয়ে না গিয়ে আর যাবে কোথায়?
দুই. বারান্তরে এক সৌদি মহিলা এসে বাদশাহ আবদুল আজিজের কাছে তার স্বামীর হত্যাকাণ্ডের বিচার চাইলেন। তো সৌদি আরবে শরিয়াহ আইন প্রচলিত এবং শরিয়াহ আইনে ‘কিসাস’ বলে একটা কথা আছে, যেটার মানে হচ্ছে এই যে হত্যার পরিবর্তে হত্যা তথা মৃত্যুদণ্ড। অন্যথায়, নিহতের ওয়ারিশরা চাইলে উপযুক্ত অর্থের বিনিময়ে কিংবা অর্থগ্রহণ ব্যতিরেকেও হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দিতে পারেন। বাদশাহ মহিলাকে প্রশ্ন করে জেনে নিলেন যে হত্যাকারী লোকটি যখন আনুমানিক চল্লিশ ফুট উঁচু একটি খেজুর গাছে চড়ে খেজুর পাড়ছিল তখন তার স্বামী গাছের গোড়ায় চুপচাপ বসেছিলেন এবং লোকটি তার স্বামীর ঘাড়ের ওপর পড়ে ঘাড় মটকানোয় তার মৃত্যু ঘটে। তবে তার স্বামীর সঙ্গে লোকটির কোনো পূর্ব-শত্রুতা ছিল না।‘আপনি কি উপযুক্ত পরিমাণ আর্থিক ক্ষতিপূরণে রাজি আছেন, নাকি লোকটির মৃত্যুদণ্ডই চান?’ বাদশাহর এই প্রশ্নের উত্তরে মহিলা জবাব দিলেন, কোরআনের আইন অনুসারে তার জীবন এখন আমার কাছে জিম্মি এবং আমি তার মৃত্যুদণ্ডই চাই। তবে তাই হোক, বাদশাহ খানিকক্ষণ নীরব থেকে বললেন, লোকটার জীবন এখন আপনার কাছে জিম্মি বটে, তবে সে যেভাবে আপনার স্বামীকে হত্যা করেছে, ঠিক একইভাবে তাকেও হত্যা করতে হবে। আমি আদেশ দিচ্ছি যে, আসামিকে গাছটির গোড়ায় বেঁধে রাখা হবে এবং আপনি গাছের আগা থেকে ওর ঘাড়ে লাফ দিয়ে পড়ে হত্যা করবেন। তবে আপনি এখনো চাইলে উপযুক্ত আর্থিক ক্ষতিপূরণ নিয়ে বাড়ি ফিরে যেতে পারেন। অতঃপর মহিলা কী চেয়েছিলেন সেটা সহজেই অনুমেয়। তার প্রতিষ্ঠিত রাজ্যের নামকরণের ব্যাপারেও তিনি যথেষ্ট মুনসিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন। নিজের নামানুসারে না রেখে তদ্বীয় পিতার নামানুসারে রেখেছেন সৌদি আরব। নিজের নামানুসারে রাখলে সেটা হতো আবদুল আজিজি আরব এবং ওটা অবশ্যই শ্রুতিমধুর হতো না। তাছাড়া বিগত শতাব্দীর শুরুতেই তিনি মাত্র দুইশ সৈন্য সহযোগে সুবেহ সাদেকের সময় অতর্কিতে অভিযান চালিয়ে যেভাবে রিয়াদের তৎকালীন তুর্কি শাসনকর্তাকে পরাস্ত করে রাজ্যটির গোড়াপত্তন করেন, দুনিয়ার ইতিহাসে সেটারও নজির পাওয়া দুষ্কর। তো সে যা হোক। বাদশাহ আবদুল আজিজ কর্তৃক কিসাসের ঘটনা সুরাহার বর্ণনাকালে আমার মনে পড়ে গিয়েছিল রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে আমি লেবার কাউন্সিলর পদে থাকাকালীন একটি প্রাসঙ্গিক ঘটনার কথা। সেটাই তাহলে এক্ষণে উপস্থাপন করি- কুয়েত-সৌদি বর্ডারের কাছে একজন বাংলাদেশি লেবার এক সৌদি যুবকের ভ্যান-মোটরগাড়ির নিচে পড়ে নিহত হলে পর নিয়মানুযায়ী দেশ থেকে পাঠানো ওর বৃদ্ধ পিতা-মাতা কর্তৃক প্রদত্ত পাওয়ার অব অ্যাটর্নি তথা আম-মোক্তারনামার বলে বলীয়ান হয়ে আমি গিয়েছিলাম শরিয়া কোর্ট থেকে ‘ব্লার্ড মানি’ তথা কিসাস-এর টাকা আদায় করতে। সঙ্গে ছিলেন দো-ভাষী হিসেবে দূতাবাসে কর্মরত একদা ঢাকা ইউনিভার্সিটির আরবি বিভাগের ছাত্র সজ্জন সামসুদ্দোহা, যিনি অদ্যাবধি দূতাবাসে আছেন এবং এই সেদিনও মক্কা-মদিনায় টেলিফোন করে আমার খোঁজখবর নিয়েছেন। এমনকি ঢাকায় টেলিফোন করেও সহি-সালামতে পৌঁছেছি কিনা জানতে চেয়েছেন। তার এই আচরণ আমার মনটাকে ছুঁয়ে গেছে বিধায় এখানে তুলে ধরলাম।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সৌদি আরবের শহরাঞ্চলেও গাড়ি দ্রুতিগতিতে চলে এবং আমাদের দেশের লোকেরা অনভ্যস্ত বিধায় রাস্তা পারাপারের সময় প্রায়শই হতাহতের ঘটনা ঘটে। আর এরূপ ঘটলেই সেদেশের পুলিশ এসে নির্ধারণ করে দেয় সংশ্লিষ্ট ড্রাইভার শতকরা শতভাগ দায়ী এবং শরিয়া কোর্ট কর্তৃক ড্রাইভারকে সে অনুযায়ী ব্লাড মানি প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়। ড্রাইভার যদি শতভাগ দায়ী থাকত তাহলে ব্লাড মানির নির্দেশ হতো মুসলমান হলে ১ লাখ রিয়াল, অন্যান্য কিতাবধারী অর্থাৎ খ্রিস্টান কিংবা ইহুদি হলে ৫০ হাজার রিয়াল, এর বাইরে হলে দশ শতাংশের দুই-তৃতীয়াংশ অর্থাৎ ৬,৬৬৬ রিয়াল। আমি থাকা অবধি ওটাই ছিল বিধি এবং আমি এ বাবদ কয়েক কোটি টাকা আদায় করে দেশে পাঠিয়েছি। জানি না বর্তমানে অবস্থাটা কী! তা আলোচ্য ক্ষেত্রে স্থানীয় শরিয়া কোর্টের হাকিম সাহেব আমাকে একপর্যায়ে জিজ্ঞেস করে বসলেন, এক্ষেত্রে আমার দেশ হলে কী করা হতো। প্রত্যুত্তরে আমি বললাম, আমার দেশে তো শরিয়া আইন নেই। তাকে আর এটা বললাম না যে আমার দেশ হলে রাস্তার লোকজন ড্রাইভারকে কিলিয়ে ভর্তা বানিয়ে ফেলত, ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য তাকে বেঁচে থাকতে হতো না। অতঃপর হাকিম সাহেব আমাকে বললেন, ছেলেটি অত্যন্ত গরিব। আপনি যদি রাজি হন তাহলে আমি আইনত প্রদেয় ১ লাখ টাকার পরিবর্তে ৫০ হাজার রিয়াল প্রদানের রায় দিয়ে দেব এবং আমিও তাকে কিছু অর্থ দিয়ে সাহায্য করব। আপনি রাজি না হলে ১ লাখেরই রায় দেব। তবে সেক্ষেত্রে সে রায়ের কপি নিয়ে সাহায্যের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরবে এবং ব্লাড মানি পেতে ২/৩ বছর লেগে যেতে পারে। সৌদিদের স্বজাতি প্রেম সত্যিই অতুলনীয়।
আমি আগে উল্লিখিত সামসুদ্দোহার সঙ্গে পরামর্শ করে হাকিমের প্রস্তাবে রাজি হয়ে গেলাম। কেননা আমরা ভেবে দেখলাম, নিহত যুবকটি ছিল মা-বাবার একমাত্র সন্তান এবং তার বৃদ্ধ পিতা ও মাতার বয়স যথাক্রমে ৭০ ও ৬৫ বছর, টাকাটা তাদের তক্ষুনি দরকার, দেরি হলে ওটা হয়তো ওদের কাজে নাও লাগতে পারে। সেদিনই নগদ ৫০ হাজার রিয়াল গ্রহণ করে পরদিন দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হলো। ব্যাপারটা ওখানেই সমাপ্ত হওয়ার কথা। কিন্তু না, মাস দুয়েকের মধ্যে বৃদ্ধ পিতা কর্তৃক রাষ্ট্রদূত বরাবরে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ চলে এলো, যেটার একটি লাইন এখনো আমার স্মরণে আছে; জনাব ছেলে হারালাম আমি আর টাকা মাফ করে দেবেন উনি, এটা কেমন কথা? আমি প্রথমে একটুখানি ঘাবড়িয়ে গেলেও পরে দেখলাম আম-মোক্তারনামাতেই আছে, আমি যা কিছু করার তিনি মানিয়া নিতে বাধ্য থাকিবেন। তাকে ওটা জানিয়ে ও সবকিছু বুঝিয়ে চিঠি লেখা হলো। এভাবেই বিষয়টির পরিসমাপ্তি ঘটল। আমি মনে মনে ভাবলাম, আল্লাহই সরল ও সৎ লোকদের সাহায্য করেন এবং নিশ্চয়ই কোনো দুষ্ট লোক- আমাদের দেশে দুষ্ট লোকের অভাব নেই- বৃদ্ধকে কুপরামর্শ দিয়ে থাকবে।
যাকগে সেসব কথা। এবারে উমরাহর ব্যাপারটায় মনোনিবেশ করা যাক। ২৪ বছর আগে আমি যখন রিয়াদ থেকে বদলি হয়ে দেশে ফিরি, তখন কাবাঘর তওয়াফ করে মহান স্রষ্টার উদ্দেশে বলেছিলাম, মৃত্যুর আগে তোমার ঘরটা আমাকে আবার দেখিও। অবশ্যই তিনি আমার প্রার্থনা মঞ্জুর করেছেন। তা না হলে একবার পেনশন শতভাগ সমর্পণ করার ১৫ বছর পর আবার পেনশন পাওয়া যায়, এটা কে কবে শুনেছে? শুধু তাই নয়, প্রায় এক বছরের বকেয়া পেনশন বাবদ যখন প্রায় ২ লাখ টাকা পাওয়া গেল, তখনই টাকাটা স্রষ্টার খাতে ব্যয় করার চিন্তা জাগল। গল্পটি পুরনো : মা ছেলেকে দুটো আধুলি দিয়ে বলেছিলেন, একটি মসজিদের দান-বাক্সে দিবি ও একটি দিয়ে তুই চকলেট খাবি। ছেলে রাস্তায় চলতে গিয়ে হোঁচট খেয়ে হাতের একটি আধুলি ড্রেনের অনেক নিচে পড়ে যাওয়াতে বলে উঠল, গেল মসজিদেরটা।
দুবাই এয়ারপোর্টে অন্য অনেকের সঙ্গে গোসলপূর্বক এরহামের কাপড় পরে আমরা স্বামী-স্ত্রী দুজনে আমিরাত এয়ারলাইন্সের সুপরিসর বিমানযোগে ৯ ডিসেম্বর সকাল ৯টা নাগাদ যখন জেদ্দা বিমানবন্দরে পৌঁছলাম, তখন কনস্যুলেটের তরফ থেকে আমাদের রিসিভ করতে আসা হালিমকে পেয়ে কী যে স্বস্তি পেয়েছিলাম সেটা বুঝিয়ে বলতে পারব না। তিনি কনস্যুলেটের গাড়িতে আমাদের মক্কার হেরেম শরিফের সন্নিকটে ম্যারিয়ট হোটেলে নামিয়ে দিয়ে গেলেন। জেদ্দার বর্তমান কনসাল-জেনারেল এফ এম বোরহান উদ্দিন সত্যিকার অর্থেই সিনিয়রদের প্রতি সম্মানবোধসম্পন্ন একজন ভালো মানুষ ও ঝানু ডিপ্লোমেট। তিনি গাড়ি পাঠিয়ে আমাকে মক্কার হোটেল থেকে জেদ্দার কনস্যুলেটে নেওয়ালেন, তার সহকর্মীদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলেন, অনেকক্ষণ খোশগল্প হলো। এমনকি পরবর্তীতে তিনি আমাদের মক্কা থেকে মদিনায় যাওয়ার ব্যবস্থাও করে দিলেন। তার এই ঋণ পরিশোধ করার নয়। আর মদিনায় পৌঁছেই আমার মনে পড়ে গিয়েছিল মহানবী (সা.) সংক্রান্ত সেই চমৎকার খোশগল্পটি।
মহানবী (সা.) একবার বাইরে থেকে ঘরে ফিরে দেখতে পেলেন যে একজন অপরিচিত বৃদ্ধা তদ্বীয় পত্নী হজরত আয়েশা (রা.) এর কাছে উপবিষ্ট। তিনি প্রশ্ন করে জানতে পেলেন, বৃদ্ধা হজরত আয়েশার মায়ের দিকের আত্মীয়। মহানবী তখন বলে উঠলেন, কোনো বৃদ্ধা তো বেহেশতে যেতে পারবে না। এ কথা শোনে বৃদ্ধাটি কাঁদতে শুরু করে দিলে মহানবী স্মিতহাস্যে বললেন, আরে বুঝলে না! বেহেশতে যাওয়ার আগে তুমি খুবসুরত যুবতীতে পরিণত হয়ে যাবে। বৃদ্ধা থাকবে না। বৃদ্ধা মহিলাটি তখন খুশিতে হাসতে লাগলেন। দেখা যাচ্ছে, আমাদের পয়গম্বর (দ.) এর জীবনেও রম্যরস ছিল। ২৪ বছর আগে আমি যে মক্কা-মদিনা রেখে এসেছিলাম, কালের করাল স্রোতে উভয়ের একেবারে খোল-নলচে পাল্টে গেছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত লিখতে গেলে সাতকাহন হয়ে যাবে। তবে এটুকু না বললেই নয় যে, বিলেতের বিগবেন ঘড়ির ন্যায় মক্কা শরিফে সংযোজিত জমজম টাওয়ারের দৃষ্টিনন্দন ঘড়ি, সেটা ২০ মাইল দূর থেকেও দৃষ্টিগোচর হয় এবং মদিনাতুন্নবী তথা নবীর শহর সংক্ষেপে মদিনা তথা মদিনা মুনাওয়ারার মসজিদে নববীতে সংযোজিত শক্ত পিলারের অগ্রভাগে স্থাপিত গুটানো যায় এমন বিশাল আকৃতির ছাতাসমূহে আধুনিক স্থাপত্য শিল্পের এক অনুপম নিদর্শন বটে। আর মসজিদ সম্প্রসারণের সঙ্গে সমানতালে মুসল্লি ও উমরাহ পালনকারীদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। কিন্তু লেখাটির কলেবর বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই বারান্তরে সৌদি আরবে পূর্বাহ্নে আড়াই বছর অবস্থানকালীন অভিজ্ঞতা বর্ণনার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে নিম্নের খোশগল্পটির মাধ্যমে সাইন-অফ করতে যাচ্ছি।
একটি খামারবাড়ির যৌথ মালিকানা ছিল একজন ইহুদি ও একজন আরবীয়র। এক সময়ে খামারবাড়ির অবস্থা খারাপ হয়ে পড়লে তারা সিদ্ধান্ত নিল যে সম্পদ যা কিছু আছে পরস্পর ভাগাভাগি করে নেবে। থাকার মধ্যে তখন ছিল কেবল একটি উট, একটি দুম্বা ও একটি মুরগি। আরবীয় প্রস্তাব করল, চলো উটটা জবাই করে মাংস খেয়ে নিই। তারপর আমি দুম্বা নেব ও তুমি মুরগি নেবে। আমি বলি কী, ইহুদি পাল্টা প্রস্তাব দিল, তুমি চাইলে দুম্বাটা নিয়ে নিতে পার। আমি আর উট দুজনে মিলে মুরগিটাকে নেব। হা-হা-হা!
লেখক : রম্য সাহিত্যিক। ডাকবিভাগের সাবেক মহাপরিচালক।