বুধবার, ৯ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা
ইতিহাস

মুহাম্মদ বিন তুঘলক

গিয়াসউদ্দিন তুঘলকের মৃত্যুর পর তার উত্তরাধিকারী উলুঘ খান বিনা বাধায় সিংহাসনে আরোহণ করেন (১৩২৫ খ্রিস্টাব্দে)। তিনি ‘মুহাম্মদ’ নাম গ্রহণ করেন। স্বীয় বংশের সঙ্গে নিজেকে পরিচিত করার জন্য তিনি ইসলামি কায়দায় তার নামের সঙ্গে পিতার নাম সর্বদা সংযুক্ত করতেন। এজন্য তার নাম হয় ‘মুহাম্মদ বিন তুঘলক’।

মুসলিম এশিয়ার ইতিহাসে মুহাম্মদ বিন তুঘলক একজন বিশেষ উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি ছিলেন। ১৩৩৫ সালে তিনি কায়রোর খলিফার কাছ থেকে সুলতান হিসেবে রাজকীয় স্বীকৃতি লাভ করেন। তার রাজত্বের প্রথম এক দশক শান্তি ও সমৃদ্ধিপূর্ণ ছিল। কিন্তু ১৩৩৫ থেকে ১৩৫১ সাল পর্যন্ত তার রাজত্বে বিভিন্ন গোলযোগ দেখা দেয় এবং বঙ্গ, গুজরাট, সিন্ধু ও দাক্ষিণাত্যে বিদ্রোহ প্রবল আকার ধারণ করে।

রাজত্বকালের প্রথম ভাগে সুলতান তার চাচাতো ভাই বাহাউদ্দিন গুরসফের বিদ্রোহের সম্মুখীন হন। তিনি গুলবরগাঁর কাছে সগোদের জায়গির ভোগ করতেন। ইবনে বতুতার মতে, গিয়াসউদ্দিন তুঘলকের মৃত্যুর পর তিনি তার পিতৃব্যপুত্রের আনুগত্য অস্বীকার করেন। বাহাউদ্দিন সগোদে বিদ্রোহী হন এবং এ বিদ্রোহ কামপিলার (তুঙ্গভদ্র) হিন্দু রাষ্ট্রে বিস্তার লাভ করে। কামপিলার রাজা বাহাউদ্দিনকে রক্ষা করার জন্য তাকে আশ্রয় দেন এবং তার পক্ষে যুদ্ধ করেন। মৃত্যুর আগে তিনি দ্বারসমুদ্রের হোয়সালরাজ তৃতীয় বীর বল্লালের কাছে তাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য পাঠান। দিল্লির সেনাবাহিনী হোয়সাল রাজ্য আক্রমণ করলে তৃতীয় বল্লাল পরাজিত হন এবং তিনি বাহাউদ্দিনকে দিল্লির রাজকীয় সেনাদের হাতে সমর্পণ করেন। জীবন্ত অবস্থায় বাহাউদ্দিনের দেহের চামড়া খুলে নেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়। এ অমানুষিক শাস্তির কথা ইবনে বতুতার ‘রেহলা’ ও ইসামির ‘ফুতুহ-উস-সালাতিনে’ পাওয়া যায়। এরপর মুলতানের শাসনকর্তা বাহরাম কিসলু খান বিদ্রোহী হয়ে ওঠেন। সুলতান এক বিরাট সেনাবাহিনী নিয়ে মুলতানের দিকে অগ্রসর হন এবং বিদ্রোহী রাজাকে পরাস্ত ও হত্যা করেন।

      জাফর খান

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর